চলতি বছরের শেষ ৬ মাসের জন্য ২৫ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি আমদানি করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ জিটুজি (সরকার টু সরকার) পর্যায়ে এবং ৫০ শতাংশ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে আগামী জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের জ্বালানি সংগ্রহের আন্তর্জাতিক টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানটি। জানা গেছে, টেন্ডার মূল্যায়ন শেষে ৪ সরবরাহকারীকে সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অনুমোদন পেলে নির্বাচিত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ (অ্যাওয়ার্ড) দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বিপিসি সূত্র জানিয়েছে, জ্বালানি আমদানির জন্য কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ২৮ মার্চ দরপত্রের নোটিশ জারি করে বিপিসি। ১১ মে দরপত্র খোলা হয়। দরপত্রে ৪টি আন্তর্জাতিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম প্রস্তাবকারী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ৫টি প্যাকেজে সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- ইউনিপ্যাক সিঙ্গাপুর পিটি, পেট্রোচায়না সিঙ্গাপুর পিটি লিমিটেড, আবুধাবির ইনোক (এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি) এবং সিঙ্গাপুরের আরেক প্রতিষ্ঠান বিটল এশিয়া। ২৫ লাখ টনের পরিশোধিত জ্বালানির মধ্যে টেন্ডারের মাধ্যমে অর্ধেক সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯ লাখ ৯০ হাজার টন ডিজেল, ১ লাখ ২০ হাজার টন জেডএ-১ ফুয়েল, ৬০ হাজার টন মেরিন ফুয়েল, ২০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল এবং ৪৫ হাজার টন অকটেন রয়েছে।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, দেশে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫২ লাখ ৫৬ হাজার ২০ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৮ লাখ ৮৮ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৯ লাখ ৪৮ হাজার ৩৩৬ মেট্রিক টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৭ মেট্রিক টন এবং সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৫৫ লাখ ৩ হাজার ৯১ মেট্রিক টন জ্বালানির ব্যবহার হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪০ লাখ ২৩ হাজার ৪০৯ মেট্রিক টন ডিজেল, ৩ লাখ ৪৫ হাজার ১২৬ মেট্রিক টন জেটএ-১ ফুয়েল, ২ লাখ ৬২ হাজার ৮২৫ মেট্রিক টন অকটেন, ৩ লাখ ২২ হাজার ৪৩২ মেট্রিক টন পেট্রোল, ১ লাখ ৫ হাজার ৮৫১ মেট্রিক টন কেরোসিন এবং ৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৪১ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল ব্যবহার হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিপিসির পরিচালক (বিপণন, অপারেশন ও পরিকল্পনা) সৈয়দ মেহদী হাসান দৈনিক আজাদীকে বলেন, দেশে চাহিদার বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। চাহিদার ৫০ শতাংশ জিটুজি (সরকার টু সরকার) এবং ৫০ শতাংশ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে আগামী জুলাই ও ডিসেম্বর সময়কালে চাহিদা মাফিক জ্বালানি আমদানির জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। ৪টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বনিম্ন প্রস্তাবকারী হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। এখন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে।