চট্টগ্রাম ওয়াসার শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্প থেকে উৎপাদিত পানি নগরীতে গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে উৎপাদিত পানি সরাসরি হালিশহর বি-ব্লকের রিজার্ভারে নিয়ে সেখান থেকে আগ্রাবাদ-হালিশহর এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে নগরবাসীর জন্য ২৪ ঘণ্টা পানি সরবরাহ করতে যাচ্ছে। এর আগে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৪ দশমিক তিন কোটি লিটার পানি উৎপাদন হলে চট্টগ্রাম শহরে ২৪ ঘণ্টা পাইপ লাইনে গ্রাহকরা পানি পাবেন। তবে রাঙ্গুনিয়ার এই পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৪ দশমিক তিন কোটি লিটার পানি উৎপাদন হলেও এখনো পুরনো পাইপ লাইনের কারণে পুরোদমে উৎপাদন করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ও ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে এই প্রকল্প থেকে আমরা গ্রাহকদের মাঝে পানি সরবরাহ শুরু করেছি। এতদিন ধরে পানির গুণগত মান আমরা পরীক্ষা করেছি। পানির মান খুবই ভালো। এখন আমরা পুরোদমে উৎপাদনে যেতে পারছি না পুরনো পাইপ লাইনের কারণে। তাই আস্তে আস্তে সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা ক্রমশ উৎপাদন বাড়াব। হালিশহর বি-ব্লক এলাকায় আমাদের যে রিজার্ভার আছে সেটার ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী এখন আমরা পানি সরবরাহ করছি।
চট্টগ্রাম নগরীতে ওয়াসার পানির দৈনিক চাহিদা ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু চট্টগ্রাম ওয়াসা এতদিন সরবরাহ করত ৩৬ কোটি লিটার। এখন শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৪ দশমিক তিন কোটি লিটার পানি যুক্ত হলে ৫০ কোটি লিটার পার হয়ে যাবে। এর ফলে নগরীতে আর পানির সংকট থাকবে না। নগরবাসী দিনে-রাতে পাইপ লাইনে পানি পাবেন।
এই প্রকল্পে প্যাকেজ-১-এর অধীনে ইনটেক ও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ, নাসিরাবাদে রিজার্ভার এবং হালিশহরে এলিভেটেড ট্যাংক নির্মাণ করা হয়। প্যাকেজ-২-এর অধীনে ট্রান্সমিশন ও কনভেয়েন্স পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়। এখন প্যাকেজ-৩ এর অধীনে নগরীর পুরাতন পাইপলাইনের পরিবর্তে নতুন পাইপলাইন বসানো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জাপানের জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে মোট ৪ হাজার ৪৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সরকার ৮৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করেছে।