২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরা শুরু

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ৪ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শেষে গতকাল শুক্রবার (৩ নভেম্বর) থেকে ফের মাছ ধরা শুরু হয়েছে। ফলে ২২ দিন পর বাজারে এসেছে সাগরের ‘পাঁচকাড়া’ মাছ। তবে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরতে আরও তিনচার দিন সময় লাগবে বলে জানান ট্রলার মালিকরা। ট্রলার মালিকরা জানান, কক্সবাজার বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। এরমধ্যে ইলিশ জাল বা ভাসা জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এছাড়া ফইল্যা জালের বোটগুলো পাঁচছয় দিনের রসদ নিয়ে মাছ ধরতে যায়। তবে চাউপ্পা জাল, ডোবা জাল, চামিলা জাল ও চোখফোলা জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে যায় এবং মাছ ধরে দিনে দিনেই ফিরে আসে। এই ধরনের জালের বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। বোটগুলোতে একেক মৌসুমে একেক প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ে। আর এখন ধরা পড়ছে পোয়া, ফাইস্যা, চোখফোলা, অলুয়া, কামিলা ও কৈ পুটি মাছ। এছাড়া ককশিটের বোটগুলোও একই ধরনের জাল নিয়ে মাছ ধরতে যায়। এই ইঞ্জিনবিহীন বোটগুলো প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার পর্যন্ত সাগরে আসাযাওয়া করে।

দরিয়ানগর বোট মালিক সমিতির সভাপতি নজির আলম বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টায় সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর দরিয়ানগর ঘাট থেকে ফইল্যা জাল, চাউপ্পা জাল, ডোবা জাল, চামিলা জাল ও চোখফোলা জাল নিয়ে ছোট আকারের ইঞ্জিন বোটগুলো সাগরে মাছ ধরতে যায়। এরমধ্যে চাউপ্পা জাল, ডোবা জাল, চামিলা জাল ও চোখফোলা জাল নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ককশিটের বোটগুলো মাছ ধরে সকাল থেকেই ফিরতে শুরু করেছে। ফলে ২২ দিন পর বাজারে আসতে শুরু করেছে সাগরের মাছ। তবে এই ঘাট থেকে ইলিশ জালের কোনো বোট সাগরে মাছ ধরে না বলে জানান তিনি।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ বলেন, ইলিশ জাল বা ভাসা জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। সাগরে ইলিশপ্রাপ্তির ভিত্তি করে এরা তিনচার দিনের মধ্যেও ফিরে আসে। তিনি জানান, কক্সবাজারে মাছ ধরার ছোট বড় ৭ সহস্রাধিক যান্ত্রিক বোট রয়েছে। বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র দুই জন জেলে। এসব বোটে প্রায় এক লাখ জেলে শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। তিনি জানান, ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার পর প্রায় ৮০ শতাংশ ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে গেলেও অর্থাভাবে এখনও ২০ শতাংশ ট্রলার ঘাটে বসে আছে। ফিশারিঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে গত ১২ অক্টোবর থেকে সাগরে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকেই মাছের অভাবে সাগরপাড়ের এ শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাট খা খা প্রান্তরে পরিণত হয়েছিল। সাগরে মাছ ধরা শুরু পর ফিশারীঘাটসহ জেলার জেলেপল্লীগুলোতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচান্দগাঁওয়ে বাইক আরোহীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে ভূমিহীনদের জন্য অনন্য এক আবাসন