২০০ আসন পেলেও বিএনপি জাতীয় সরকার করবে : খসরু

বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে আসবেন না

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

আগামী নির্বাচনে বিএনপি যদি দুইতৃতীয়াংশ আসনে জয় পায়, তাহলেও জাতীয় সরকার গঠন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বিএনপি ২০০ সিট পেলেও এককভাবে ক্ষমতায় যাবে না। জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এরপর ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংস্কার না করলে তারা আবার ছুড়ে ফেলে দেবে। শেখ হাসিনা পলায়ন করার পরে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে যে পরিবর্তন হয়েছে, এটা যদি আমরা না বুঝি, আমরা ধারণ করতে না পারি, আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ হবে না। রাজনীতিকদের ও রাজনৈতিক দলের কোনো ভবিষ্যৎ থাকবে না। গতকাল মঙ্গলবার যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে ‘খুলনা বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় একটি হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আগামীর বাংলাদেশ পুরনো বাংলাদেশের মতো চলবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ বললে হবে না। রূপান্তরমূলক পরিবর্তন যদি না হয়, এই যে গর্তের মধ্যে আমরা পড়েছি, এখান থেকে আর বেরোনোর কোনো সুযোগ নেই। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে আসবেন না। দেড় বছর আগে যে ৩১ দফা দিয়েছে বিএনপি তার মধ্যে সংস্কারের সবকিছু রয়েছে। তারও ছয় বছর আগে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সংস্কারের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সংস্কার হতে হবে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে তাদের প্রস্তাবনাগুলো জাতীয় সংসদে আলোচনা করবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সরকার।

সম্প্রতি শতাধিক পণ্যে কর আরোপের সমালোচনা করে আমীর খসরু বলেন, এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে মানুষ দুই বেলা খেতে পারছে না। তার মধ্যে এখন ১৫ শতাংশ করে ১০৯টা পণ্যে কর বাড়িয়েছে। যাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে গেছে মূল্যস্ফীতির কারণে; তার মধ্যে এই করভ্যাট বাংলাদেশের কত মানুষকে আগামী দিনে দারিদ্র্যসীমার নিচে নিয়ে যাবে এটা চিন্তা করতে পারবেন না। তিনি বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, কর আদায়নির্ভর অর্থনীতি কখনো নির্ভরশীল হতে পারে না। অর্থনীতি নির্ভরশীল হয় ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসারের মাধ্যমে। ব্যবসার যত প্রসার ঘটবে কর তত বেশি জমা হবে। এজন্য অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানোর দরকার পড়বে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে সুবিধাবাদীদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে ব্যবসাবাণিজ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর পুনরুদ্ধারে গণতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করতে হবে।

ব্যবসায়ী নেতাদের আলোচনার ভিত্তিতে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সব চেম্বার থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিতাড়িত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রেখে চেম্বারের গণতন্ত্রায়ন হবে না। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে চেম্বারসহ সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে। আমলাতন্ত্র বা সরকার তখন আর অযাচিত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

এ প্রসঙ্গে খসরু বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের প্রতিটি নাগরিকের অর্থনীতিতে সমানভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেছিলেন। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বিগত ১৫ বছর যেসব ব্যবসায়ী ফ্যাসিবাদের হামলা, মামলা, নির্যাতনের শিকার হয়ে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে বিশেষভাবে পদক্ষেপ নেবে।

খুলনা বিভাগের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমীর খসরু অঞ্চলভিত্তিক অর্থনৈতিক সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। বলেন, এক অঞ্চলের অর্থনীতি দেশের অন্য অঞ্চলের অর্থনীতির সাথে মিলবে না। প্রতিটি অঞ্চলকেই তার নিজস্ব অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঐক্য, সমন্বয়ের প্রার্থী চূড়ান্ত, সমমনা প্রার্থী দেবে কী না জানা যাবে আজ
পরবর্তী নিবন্ধসুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ কাউন্সিলের মাধ্যমে, অধ্যাদেশ জারি