১৯ জন নকলনবিশ নিয়োগে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে

জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দুদকের অভিযান । অবসরপ্রাপ্ত জেলা রেজিস্ট্রার মিশন চাকমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর কোর্ট হিলে থাকা জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়, চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়েছে দুদক। নকলনবিশ নিয়োগে অনিয়ম, দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি, নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুষ দাবিসহ নানাবিধ অনিয়মদুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম১ এর সহকারী পরিচালক সাইয়েদ আলম। অভিযানের এ সময় জেলা রেজিস্ট্রার, চট্টগ্রাম ছিলেন না। তিনি পরিদর্শনজনিত কারণে বাইরে ছিলেন।

দুদক জানায়, জেলা রেজিস্ট্রার, চট্টগ্রামকে না পেয়ে তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত সদর সাবরেজিস্ট্রার মো. শহিদুর রহমানের কাছে অভিযোগ বিষয়ে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় সন্দ্বীপ সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সাবেক অফিস সহকারী মাহফজুর রহমানের বিরুদ্ধে নিবন্ধন অধিদপ্তরের যথাযথ অনুমোদন ব্যতিরেকে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাখ্যান ও ১৯ জন নকলনবিশকে কর্তৃপক্ষের লিখিত নির্দেশনা ব্যতিরেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা রেজিস্ট্রার (অবসরপ্রাপ্ত) মিশন চাকমার অনিয়মের অভিযোগটির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মহাপরিদর্শক (নিবন্ধন) কর্তৃক জেলা রেজিস্ট্রার (অবসরপ্রাপ্ত) মিশন চাকমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

দুদক জানায়, বাঁশখালীর নকলনবীশ মায়া রাণী বড়ুয়াকে টিসি মোহরার পদে পদোন্নতি দেয়া হলেও ওই তালিকায় সিনিয়র কয়েকজনকে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়। সন্দ্বীপের সাবরেজিস্ট্রি অফিসের শূন্য পদে নিকটবর্তী অধিক্ষেত্রের কোনো সাবরেজিস্ট্রারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদানের পরিবর্তে সুদূর লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর অফিস সাবরেজিস্ট্রার ইসমাইল হোসেনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়। বিষয়টির বৈধতা খতিয়ে দেখতে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। এছাড়া রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত কাজে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে জনৈক সাজোরা বেগমসহ কয়েকজনের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে। তারা আর্থিক কোনো প্রকার হয়রানির শিকার হননি মর্মে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমকে জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম জেলা দলিল লিখক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম দলিল লেখক এম এ নেওয়াজের সাথে কথা বলা হয়। তারা জানান, দলিল লেখার ক্ষেত্রে প্রতি শব্দের বিনিময়ে ৪৫ পয়সা হারে অর্থ ছাড়া অন্যকোনো অর্থ দলিল দাতাগ্রহীতাদের কাছ থেকে গ্রহণ করেন না। দুদক জানায়, সামগ্রিক রেজিস্ট্রি অফিসে একটি অসাধু চক্রের আভাস পাওয়া গেলেও অভিযানকালে দালিলিকভাবে তার সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। বাৎসরিক পরিদর্শন ও ইনডেন্টকালে নিকাহ্‌ রেজিস্ট্রারদের নিকট থেকে টাকা আদায়ের বিষয়টি সত্য হলেও তা দালিলিকভাবে প্রমাণ করা যায়নি। দুদক আরো জানায়, জেলা রেজিস্ট্রার (অবসরপ্রাপ্ত) মিশন চাকমার বিরুদ্ধে তার অধীনস্থ রেজিস্ট্রি অফিসসমূহ থেকে মাসিকহারে চাঁদা আদায়, রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী নিয়োগ, পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবৈধ লেনদেন, নিজ অধস্থন কর্মচারীর মাধ্যমে অবৈধ টাকা আদায়ের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, অবৈধ লেনদেনের ক্ষেত্রে তার সহযোগী কর্মচারীদের বিষয়ে অধিকতর খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্রাদি পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম অতি দ্রুত কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে চবির ৫ শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে অপহরণের অভিযোগ