দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের দুই রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ৮টি আসনের ৭৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই হয়েছে। এর মধ্যে এক শতাংশ ভোটের গরমিল, ঋণ খেলাপি, আয়কর রিটার্ন দাখিল না করা, প্রস্তাবক–সমর্থক না থাকায় ১২ স্বতন্ত্রসহ মোট ১৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বাকি ৮ আসনের মনোনয়ন যাচাই বাছাই হবে আজ।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন মীরসরাই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। ফটিকছড়ি আসনে রয়েছেন ৩ জন। তারা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান, স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম নওশের আলী ও মো. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী। সন্দ্বীপ আসনে রয়েছেন ২জন। তারা হলেন জাকের পার্টির প্রার্থী মো. নিজাম উদ্দিন নাছির ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আমিন রসুল। সীতাকুণ্ড আসনে রয়েছেন ৪জন। তারা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মোহাম্মদ ইমরান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এবং বিএনএফের প্রার্থী মো. আকতার হোসেন। হাটহাজারী আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ২জনের। তারা হলেন, মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী এবং মোহাম্মদ নাছির হায়দার করিম। রাউজান আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজমের।
চট্টগ্রাম–৮ চান্দগাঁও–বোয়ালখালী আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে মোট ৫জনের। তারা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম, আরশেদুল আলম বাচ্চু, বিজয় কিষাণ চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির প্রার্থী মো. মহিবুর রহমান বুলবুল এবং একই দলের মনজুর হোসেন বাদল।
মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন আওয়ামী লীগের ৮ হেভিওয়েট প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ সালাম, সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা, সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, এস এম আল মামুন, মাহবুব উর রহমান রুহেল এবং জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ ৫৬ জন প্রার্থী।
গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে চট্টগ্রামের রিটার্নিং অফিসার ও বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের কার্যালয়ে ও রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কার্যালয়ে ৮টি সংসদীয় আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করে তাদের মনোনয়ন বাতিল হয়।
বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম মনোনয়নপত্র বাছাই করেন চট্টগ্রাম–৪ সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম–৫ হাটহাজারী, চট্টগ্রাম–৮ চান্দগাঁও–বোয়ালখালী আসনের প্রার্থীর মনোনয়ন। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে মোট ১১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
অপরদিকে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বাছাই করেন চট্টগ্রাম–১ মীরসাই, চট্টগ্রাম–২ ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম–৩ সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম–৬ রাউজান এবং চট্টগ্রাম–১৩ আনোয়ারা–কর্ণফুলী আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মোট ৭ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
চট্টগ্রাম–১ মীরসরাই আসন : মীরসরাই আসনে মোট প্রার্থী সংখ্যা ৮জন। গতকাল সকালে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এই আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে সমর্থক ভোটারের তথ্যে গরমিল পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। অপর ৭ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। গিয়াস উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত যে তালিকা মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দিয়েছেন তার মধ্যে থেকে ১০জন ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর সঠিক কিনা মাঠ পর্যায়ে যাচাই করতে গিয়ে ৭জন ভোটারের স্বাক্ষর সঠিক পাওয়া যায়। অবশিষ্ট ৩ জন ভোটার বিদেশে আছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন তাদের আত্মীয়–স্বজনরা। তিনজন ভুয়া ভোটারের স্বাক্ষরের কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
এই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেলসহ অপর ৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
চট্টগ্রাম–২ ফটিকছড়ি আসন : ফটিকছড়ি আসনে মোট প্রার্থী সংখ্যা ১২ জন। গতকাল চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এই আসনের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে তথ্যে গরমিল পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহানসহ ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল করেন। ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন। বাছাইকালে জেলা প্রশাসক প্রার্থীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি (স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান) এক শতাংশ ভোটারের যে তালিকা দিয়েছেন তার মধ্যে ১০ জন ভোটারের স্বাক্ষর যাচাই করে দেখা গেছে, ১ জন তিন বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন, ২ জন প্রবাসে আছেন, একজন স্বাক্ষর করেননি, ১ জন এলাকায় ছিলেন না, ২ জন স্বাক্ষর করেননি। ১ জন স্বাক্ষর করেছেন। এই কারণে আপনার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করছি। এই আসনের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম নওশের আলীর স্বাক্ষরযুক্ত ১০ ভোটারের মধ্যে একজন ৮ মাস আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। অপর ৯ জন বলেছেন তারা তার পক্ষে স্বাক্ষর করেননি। তাদের ভুয়া স্বাক্ষর দেয়া হয়েছে। এই কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী এক শতাংশ ভোটারের তালিকা জমা দিতে পারেননি। তিনি মাত্র ২ হাজার ৪৬০জন ভোটারের নামের তালিকা জমা দিয়েছেন। আরো ২ হাজার ১০৪ জন ভোটারের নামের তালিকা জমা দিতে পারেননি। এ কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপির এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হোসাইন মো. আবু তৈয়বসহ ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৩ সন্দ্বীপ আসন : সন্দ্বীপ আসনে মোট প্রার্থী সংখ্যা ১০ জন। গতকাল চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এই আসনের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে ২ প্রার্থীর তথ্যে গরমিল পাওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতাসহ ৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। এই আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী মো. নিজাম উদ্দিন নাছিরের সমর্থনকারী তার নির্বাচনী এলাকার না হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। অপরদিকে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আমিন রসুলের কাগজপত্র সঠিক না থাকায় তার মনোনয়নপত্রও বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
চট্টগ্রাম–৪ সীতাকুণ্ড সংসদীয় আসন : সীতাকুণ্ড সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র মিলে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৯ প্রার্থী। গতকাল সকালে চট্টগ্রামের রিটার্নিং অফিসার ও বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম এই আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে বর্তমান সংসদ দিদারুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মোহাম্মদ ইমরানসহ ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম আল মামুনসহ ৫ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন।
লায়ন মোহম্মদ ইমরান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে এক শতাংশ সমর্থক ভোটারের যে তালিকা দিয়েছেন, তার থেকে ১০ জন ভোটারের তথ্য সঠিক কিনা মাঠ পর্যায়ে যাচাইয়ে গেলে সেখানে ৯ জনের তথ্য সঠিক পাওয়া যায়। একজনের তথ্যে গরমিল পাওয়া যায়। এই কারণে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তিনি আপিল করতে পারবেন বলে জানান এই আসনের রিটার্নিং অফিসার।
একই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু দলীয় মনোনয়নের কোনো কাগজ দাখিল না করায় তার মনোনয়নপত্রটিও বাতিল করা হয়। যদিও তিনি গত শনিবার নিজেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই আসনে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মনোনয়ন পত্রের সাথে ১ শতাংশ জনসমর্থনের তালিকা অসম্পূর্ণ ছিলো। অপরদিকে বিএনএফের প্রার্থী মো. আকতার হোসেন তার মনোনয়নের সাথে ট্যাঙ রিটার্ন সাবমিট করতে পারেননি বলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। অন্যদিকে বাকি ৫ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৫ হাটহাজারী আসন: হাটহাজারী আসনে মোট প্রার্থী সংখ্যা ১০ জন। এই আসনের রিটার্নিং অফিসার ও বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম গতকাল মনোনয়নপত্র বাছাইকালে ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর তথ্যে গরমিল পাওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। আওয়ামী লীগের এম এ সালাম, জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ অপর ৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাছির হায়দার করিমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে যে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা দিয়েছেন তার মধ্যে ১০ জনের স্বাক্ষর মাঠ পর্যায়ে যাচাইকালে তথ্যে গরমিল পাওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং অফিসার।
চট্টগ্রাম –৬ রাউজান আসন : এই আসনে প্রার্থী সংখ্যা মোট ৫জন। গতকাল জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। বর্তমানে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীসহ ৪জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন। মনোনয়নপত্র বাছাইকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। মনোনয়নপত্র বাছাইকালে রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত যে তালিকা জমা দিয়েছেন তার মধ্যে এজন প্রবাসে থাকেন, একজন সাতকানিয়ার ভোটার। এই কারণে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হল।
চট্টগ্রাম–৮ (চান্দাগাঁও–বোয়াখালী) আসন : মোট ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। গতকাল এই আসনের রিটার্নিং অফিসার ও বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম মনোনয়নপত্র বাছাইকালে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনযুক্ত তালিকায় গরমিল পাওয়ায় আবদুচ ছালাম, আরশেদুল আলম বাচ্চু, বিজয় কিষাণ চৌধুরীসহ ৫জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। বাছাইকালে রিটার্নিং অফিসার জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম এক শতাংশ ভোটারের যে তালিকা জমা দিয়েছেন তার মধ্যে থেকে ১০ জন ভোটারের প্রার্থীর প্রতি সমর্থনের স্বাক্ষর ঠিক আছে কিনা মাঠ পর্যায়ে যাচাই করতে গেল একজন ভোটারের তথ্যে মিল পাওয়া যায়নি। এই কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে তার মনোনয়নপত্রে আর্থিক কোনো বিষয়ে অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। তাকে আপিল করার পরামর্শ দেন রিটার্নিং অফিসার। এ আসনের অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আরশেদুল আলম বাচ্চুর ১০টি সমর্থকযুক্ত ভোটারের তািলকার মধ্যে ৬জনের তথ্যে মিল নেই। এই কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কিষাণ চৌধুরীর সমর্থক ভোটারের একটিরও তথ্যের মিল নেই বলে জানান রিটার্নিং অফিসার। এই কারণে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়।
এই আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির প্রার্থী মো. মহিবুর রহমান বুলবুলের মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের অভিযোগ ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে তিনি ব্র্যাংক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপি। এই কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। একই দলের মনজুর হোসেন বাদলের মনোনয়নেও তথ্যে ঘাটতি থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম–১৩ (আনোয়ারা–কর্ণফুলী) : এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদসহ মোট ৭জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল এই আসনের রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে এবং হলফনামায় তথ্যে ত্রুটি পাননি। তাই এই আসনে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোসাইন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি–বিএসপির মোহাম্মদ আরিফ মঈনু উদ্দীন, জাতীয় পার্টির আবদুর রব চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবুল হোসাইন এবং তৃণমূল বিএনপির মকবুল আহম্মদ চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের ব্যাপারে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থকযুক্ত ভোটারের যে তালিকা মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দেয়া হয়েছে তাতে বেশিরভাগই গরমিল থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নগুলো বাতিল করা হয়। বাতিল হলেও প্রার্থীদের আপিলের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া কয়েকজন প্রার্থীর নথিপত্র পর্যাপ্ত না থাকায় তাদের সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মোট ১৪৮ জন মনোনয়ন জমা দেয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর, বাছাই শুরু হয়েছে গতকাল ৩ ডিসেম্বর থেকে। চলবে আজ ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬–১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত, নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৩ লাখ ৯৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ৬২ জন এবং নারী ভোটার ৩০ লাখ ২১ হাজার ৯০২ জন।