পিলে চমকানোর মতোই ব্যাপার! কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁ থানা এলাকার মোরশেদ নামের কিশোরটির বয়স মাত্র পনের বছর। এর মধ্যে গত সাত বছর ধরেই সে একের পর এক চুরিতে হাত পাকিয়েছে। মসজিদ থেকে জুতা চুরির মাধ্যমে শুরু। এরপর একে একে গাড়ির ব্যাটারি চুরি, বাসা বাড়িতে পানির পাম্প/মোটর চুরিসহ জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন ধরনের চুরিতে। তারপর সে যোগ দেয় গাড়ির হেলপার হিসেবে। সেখানেও সে তার দক্ষতার(!) স্বাক্ষর রেখে বিভিন্ন ড্রাইভারদের পকেট থেকে কৌশলে টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। বরাবরই থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। হেলপার থাকার সময় সে শিখে নেয় ড্রাইভিং।
সর্বশেষ সে চট্টগ্রাম এসে আকবরশাহ্ থানা এলাকা থেকে শাহীন নামের একজনের ড্রাম ট্রাক চুরি করে পালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয় আকবর শাহ থানা পুলিশের হাতে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ওসি আকবর শাহ আজাদীকে জানান, হেলপার থাকার সময় সে শিখে নেয় ড্রাইভিং। ট্রাকের হেলপার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে চাকরি করে ৩ দিন। কোথাও থাকার জায়গা না থাকায় মালিকের অনুমতি নিয়ে রাত্রি যাপনও করতো ওই গাড়িতেই। নিয়োগের চতুর্থ দিন গত ২৭ জুলাই গভীর রাতে ওই ড্রাম ট্রাক নিয়ে সে চলে যায় অজ্ঞাত স্থানে।
নিয়োগের সময় ড্রাম ট্রাকের মালিক রাখেননি কোনো কাগজপত্র, জানেন না তার কোনো ঠিকানা। তারপরও আসামির অসম্পূর্ণ/ ভুল ঠিকানা দিয়ে মামলা হয় আকবর শাহ্ থানায়। তদন্তকালে আকবর শাহ্ থানা পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানতে পারে গাড়িটি গিয়েছে কঙবাজার রুটে। ২৭ জুলাই রাত একটার দিকে ড্রাম ট্রাকটি নতুন ব্রিজ টোল প্লাজা পার হওয়ার সময় ড্রাইভিং সিটে থাকা মোরশেদ টোল পরিশোধে ব্যর্থ হলে টোল আদায়ে নিয়োজিত লোকজন তার নিকট থেকে গাড়ির কাগজপত্র ও জ্যাক রেখে দেয়।
তারপর সে গাড়ি নিয়ে চলে যায় কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা এলাকায়। বিক্রি করে দেয় গাড়িটির ব্যাটারি, চেষ্টা করে গাড়িটির ৩টি টায়ার বিক্রিরও। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আকবরশাহ্ থানা পুলিশের একটি টিম চকরিয়া থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে ড্রাম ট্রাক, ব্যাটারি ও ৩টি টায়ার এবং আটক হয় আইনের সাথে সংঘাতে জড়ানো মোরশেদকে। গতকাল রোববার বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয় তাকে।