কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংস পরিস্থিতির কারণে ১৪দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল রেলওয়ের চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) থেকে কন্টেনারবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সিজিপিওয়াই থেকে গতকাল দুটি কন্টেনারবাহী ট্রেন ঢাকায় কমলাপুর আইসিডির উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এছাড়া ৪টি তেলবাহী ট্রেনও চট্টগ্রামে থেকে ছেড়ে গেছে বলে জানান চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডের দায়িত্বরত রেলওয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এনামুল হক সিকদার।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড থেকে দুটি কন্টেনারবাহী ট্রেন ঢাকায় কমলাপুর আইসিডির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া আরও দুটি ট্রেন কমলাপুর আইসিডি থেকে পণ্য অথবা খালি কন্টেনার নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। একটি ট্রেন প্রতিদিন চট্টগ্রামের সিজিপিওয়াই ইয়ার্ডে কন্টেনার
লোডিং–এ থাকে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫টি ট্রেন খাদ্যপণ্য, জ্বালানি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে সারাদেশে চলাচল করে।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংস পরিস্থিতির কারণে গত ১৯ জুলাই থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে রেল কর্তৃপক্ষ। এর আগে ১৮ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম থেকে দুটি কন্টেনারবাহী ট্রেন ঢাকায় কমলাপুর আইসিডির উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও ট্রেন দুটি ঢাকায় যেতে পারেনি; লাকসাম ও আখাউড়ায় আটকে যায়। ১৪দিন পর গত বৃহস্পতিবার লাকসাম ও আখাউড়া থেকে কন্টেনারবাহী ট্রেন দুটি ঢাকায় কমলাপুর আইসিডিতে পৌঁছে।
চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডের দায়িত্বরত রেলওয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এনামুল হক সিকদার আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড থেকে আজকে (গতকাল শুক্রবার) ২টি কন্টেনারবাহী ট্রেন ঢাকায় কমলাপুর আইসিডির উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এছাড়াও ৪টি তেলবাহী ট্রেনও ছেড়ে গেছে। একটি গেছে দোহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, একটি হাটহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। অপর দুটি গেছে তেলের গাড়ি গেছে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে।
কন্টেনার ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে আজকে (গতকাল থেকে) চলাচল শুরু হলেও তেলবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে ২৩ জুলাই থেকে। ১৪ দিন পর চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড থেকে গতকাল শুক্রবার কন্টেনার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
এনামুল হক সিকদার বলেন, চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড থেকে সর্বশেষ গত ১৮ জুলাই রাতে ২টি কন্টেনার ট্রেন ছেড়েছিলাম। আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে কন্টেনারবাহী ট্রেন ২টি ঢাকা আইসিডিতে পৌঁছাতে পারেনি। একটি লাকসাম ও একটি আখাউড়ায় আটকা পড়ে। এই কন্টেনারবাহী ট্রেন দুটি বৃহস্পতিবার ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি–রফতানি পণ্যের বেশির ভাগই কন্টেনারে করে রেলপথে পরিবহন করেন ব্যবসায়ীরা। রেলওয়ে স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক তিনটি কন্টেনার ট্রেন পরিচালনা করে থাকে। রেলওয়ের বার্ষিক রাজস্ব আয়ের বড় অংশ আসে পণ্য পরিবহন খাত থেকে। গত ১৪ দিন পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় রেলের রাজস্ব আয়ে এ বছর বড় ধরনের ধাক্কা পড়বে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।