১৩২টি ডিম পেড়েছে আরও একটি জলপাই রঙা কচ্ছপ

সোনারপাড়া সৈকত

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:৪৪ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের সোনারপাড়া সৈকতে এবার ১৩২টি ডিম পেড়েছে আরো একটি ‘অলিভ রিডলি’ বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিম। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে মা কাছিমটি সমুদ্র থেকে এসে উখিয়ার রেজু নদী সংলগ্ন উত্তর সোনারপাড়া সৈকতে ডিম পাড়ে এবং কয়েক ঘণ্টা পর ফের সমুদ্রে চলে যায়।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ডিমগুলো বৈজ্ঞানিক উপায়ে সৈকতের হ্যাচারিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ। তিনি বলেন, এর আগে একই সৈকতে আরও একটি কচ্ছপ ১২৫টি ডিম পেড়েছে। এ ডিমগুলোও বাচ্চা ফোটানোর জন্য সংরক্ষণ করা হয়।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, আগামী ৫০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যে ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফুটবে। এরপর বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, ‘অ্যারিবদা’ বা একই সময়ে দলে দলে ডিম পাড়তে আসার জন্য বিখ্যাত ‘অলিভ রিডলি’ বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিম প্রতিবছর নভেম্ভর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কঙবাজারের বিভিন্ন সৈকতে ডিম পাড়তে আসে। এরমধ্যে কিছু কাছিম ডিম পাড়তে আসার পথে এবং কিছু কাছিম ডিম পেড়ে ফিরে যাওয়ার পথে বিভিন্নভাবে মারা যায়। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে কঙবাজার সৈকতে ৫১টি কাছিম ডিম পেড়েছে। এছাড়া ১৯টি মৃত কাছিম রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞানীরা জানান, সারা বিশ্বের সাগরে প্রায় সাত প্রজাতির সিটার্টল বা সামুদ্রিক কচ্ছপ সাঁতার কেটে বেড়ায়। তবে আমাদের বঙ্গোপসাগরে দেখা যায় তিন থেকে পাঁচ প্রজাতির। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় অলিভ রিডলি টার্টল বা জলপাই রঙা কাছিম। এছাড়া গ্রিন টার্টল বা সবুজ রঙা কাছিম ও হঙবিল বা ভুত কাছিমও কঙবাজার সৈকতে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। এরমধ্যে রিডলি জাতের স্ত্রী কচ্ছপেরা হাজার মাইল অতিক্রম করে প্রতি বছর একই সময়ে ও স্থানে দলে দলে এসে বাসা বাঁধে এবং সৈকতে ডিম পাড়ে, এরপর সাগরে চলে যায়। রিডলি সামুদ্রিক কাছিমের এই অনন্য আচরণ সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীদের কাছে এক আশ্চর্যতম ঘটনা। এই ঘটনাটি রিডলি কাছিমের ‘অ্যারিবদা’ হিসাবে পরিচিত।

একটি স্বাস্থ্যকর সমুদ্রের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসাবে ধরা হয় সামুদ্রিক কচ্ছপকে। কাছিমকে ‘সামুদ্রিক ঝাড়ুদার’ও বলা হয়। এরা সমুদ্রের পঁচাগলা বস্তু খেয়ে দূষণ পরিষ্কার করে। কাছিম পরিবেশেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বা ‘কিস্টোন প্রজাতি’ হিসাবেও বিবেচিত। পরিবেশে এই ধরনের প্রজাতির বেঁচে থাকার উপর নির্ভর করে আরো বহু প্রজাতির প্রাণীর অস্তিত্ব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচমেক হাসপাতালে দুই দালাল আটক
পরবর্তী নিবন্ধপতেঙ্গায় রাস্তা পার হওয়ার সময় কারের ধাক্কায় তরুণের মৃত্যু