হঠাৎ করেই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ। বিশ্বব্যাপী সবার বিরুদ্ধে লড়াই করার পরিবর্তে এখন তা অনেকটাই পরিণত হয়েছে পরিচিত রণাঙ্গনে, অর্থাৎ আমেরিকা বনাম চীনে। কিন্তু যে চীন আইফোন থেকে শুরু করে শিশুদের খেলনা পর্যন্ত সবকিছু আমেরিকায় রপ্তানি করে এবং মার্কিন আমদানির প্রায় ১৪ শতাংশ সরবরাহ করে, তার জন্য কেন আরও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকান পণ্যের ওপর বেইজিংয়ের ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলাই এই শাস্তির কারণ, যেটাকে তিনি ‘অসম্মানের প্রকাশ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বুধবার চীনের পণ্যের উপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরের দিনই হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্ক বেড়ে ১২৫ শতাংশ নয় বরং ১৪৫ শতাংশ হয়েছে। ১২৫ শতাংশ শুল্ক বেড়ে কেন ১৪৫ শতাংশ হল সে ব্যাখ্যাও দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নতুন ঘোষণায় চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। তবে প্রাণঘাতী মাদক ফেন্টানিল নিয়ে বিতর্কে চীনের উপর আগে থেকেই আরোপ করে রাখা ২০ শতাংশ শুল্কও বর্ধিত এই ১২৫ শতাংশ শুল্কর সঙ্গে কার্যকর হবে। ফলে চীনের পণ্যে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১৪৫ শতাংশে।
এদিকে শুল্ক নিয়ে আমেরিকা আলোচনায় বসতে চাইলে ‘দরজা খোলা’ বলে জানিয়েছে চীন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের কাছে মাথা নত করবে না তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার স্পষ্ট ভাবে এ কথা জানিয়ে দিলেন চীনের বাণিজ্য দফতরের মুখপাত্র হে ইয়ংকিয়ান। তিনি বলেন, ‘যদি আমেরিকা কথা বলতে চায়, তবে আমাদের দরজা খোলাই রয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনা হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমতার
ভিত্তিতে।’ একই সঙ্গে খানিক হুঁশিয়ারির সুরেই তিনি বলেন, “চাপ দিয়ে, হুমকি দিয়ে কিংবা ব্ল্যাকমেইল করে চীনের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসা যায় না।”
‘পারস্পরিক শুল্ক’ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বিবাদ যখন তুঙ্গে, তখন আমেরিকা এবং চীন আলোচনায় বসে সমঝোতার পথে হাঁটে কি না, তা নিয়েই কৌতূহল তৈরি হয়েছে।