অর্থ ‘পাচার’ করে দেশের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ‘ধ্বংসের প্রান্তে’ নিয়ে যাওয়া পি কে হালদারের সহযোগী হিসেবে নাম আসার পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক কেন এখনও গ্রেপ্তার করছে না, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এদিকে অবসায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের (পিএলএফএসএল) ১২২ ঋণ খেলাপি ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশের পরও এই ১২২ ঋণ খেলাপি ব্যক্তি বা সত্তা নির্ধারিত তারিখে হাইকোর্টে হাজির হননি। আদালত বলেছে, পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক এবং সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হল। আর পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের (পিএলএফএসএল) সাময়িক অবাসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুইডেটর) মো. আসাদুজ্জামানকে ওই ১২২ ব্যক্তি বা সত্তার বর্তমান ঠিকানা সরবরাহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং রাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে বলা হয়েছে তাকে। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ গত ৯ মার্চ এ আদেশ দেয়। তবে আদেশের বিষয়টি গতকাল সোমবার জানা যায়। খবর বিডিনিউজের।
অপরদিকে দুদক এস কে সুর, শাহ আলম গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ না নিলে আদালত এ বিষয়ে আদেশ দিতে বাধ্য হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ। গতকাল সোমবার এ বিষয়ে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম ও খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। শুনানির এক পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক নজরুল ইসলাম তালুকদার দুদকের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, পি কে হালদারের অর্থ আত্মসাত এবং পাচারের মামলায় গ্রেপ্তার যারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং সেই জবানবন্দিতে যাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের বিষয়ে দুদকের কী পদক্ষেপ নিয়েছে। জবাবে দুদকের আইনজীবী বলেন, জবানবন্দিতে যাদের নাম এসেছে, তাদের কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কেউ কেউ পলাতক। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার তখন বলেন, এস কে সুর ও শাহ আলমের নাম বিভিন্ন মাধ্যমে আসছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? দুদকের আইনজীবী তখন বলেন, কমিশনের চিঠির ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইনানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তাদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে। বিচারক তখন দুদকের আইনজীবীর কাছে প্রশ্ন রাখেন- গ্রেপ্তার করছেন না কেন? আপনারা পদক্ষেপ না নিলে আদেশ দিতে বাধ্য হব। আগে তাদের ধরেন। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে মেহমানদারী করতে পারেন না। তাদের অবশ্যই কারাগারে নিতে হবে।












