টিআর (ট্রাস্ট রিসিট) ঋণের ১৮৯ কোটি টাকা (সুদে–আসলে) ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করায় ১১ জন ব্যবসায়ী ও ব্যাংকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তারা হলেন নগরীর আছদগঞ্জের মেসার্স মিজান ট্রেডিংয়ের মালিক মো. মিজানুর রহমান, নুরজাহান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাসমীর ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের পরিচালক জহির আহমেদ, টিপু সুলতান, ফরহাদ মনোয়ার, অগ্রণী ব্যাংক আছদগঞ্জ শাখার সাবেক প্রিন্সিপ্যাল অফিসার মোস্তাক আহমেদ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় অঞ্চলের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক মো. আবুল হোসেন তালুকদার, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, সিলেট সার্কেলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম ও সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক তাজরীনা ফেরদৌসি, প্রধান শাখার সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন এবং অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ আব্দুল হামিদ। গতকাল রোববার দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, সুদে–আসলে বর্তমানে উক্ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮৯ কোটি টাকা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মেসার্স মিজান ট্রেডার্সের মালিক মিজানুর রহমান নগরীর অগ্রণী ব্যাংক আছদগঞ্জ শাখায় ২০০৯ সালে একটি চলতি হিসাব খোলেন। পরের বছর ২০১০ সালে তিনি ছোলা ও গম আমদানির জন্য টিআর ঋণের জন্য আবেদন করলে ১৭টি শর্তে ৫১ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি উক্ত টিআর ঋণ ব্যাংকে জমা দেননি। এ কারণে ঋণটি ২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পুনঃতফসিলও করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, ব্যাংক ও গ্রাহকের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক এবং দীর্ঘদিন যাবত শাখায় ব্যবসা পরিচালনাকারী পরীক্ষিত গ্রাহকরাই টিআর ঋণ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হয়ে থাকে। কিন্তু ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান মিজান ট্রেডার্স কোনো পরীক্ষিত গ্রাহক নয়। উক্ত ঋণ প্রস্তাবই শাখায় গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের প্রথম ঋণ প্রস্তাব। উক্ত ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের গাইডলাইনে সহায়ক জামানত হিসেবে সহজে নগদায়নযোগ্য তরল সম্পদ অথবা কেবলমাত্র শহর এলাকায় অবস্থিত স্থাবর সম্পত্তি লাভ করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হয়নি। জামানত হিসেবে শুধুমাত্র টিআরের সমপরিমাণ চেক গ্রহণ করা হয়। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে টিআর ঋণের ৫১ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।