টানা ৪ দিনের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে কক্সবাজারে। সৈকতের বিশাল বালিয়াড়িতে বসে মিলনমেলা। তবে অনেকেই হোটেলে রুম না পেয়ে লাগেজ বা ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে রাস্তা ও বালিয়াড়ির কিটকটে। পর্যটকরা বলছেন, রুম না পেয়ে কক্সবাজার ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তারা। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি আর বৃহস্পতিবার একদিনের ছুটি নিলে সাপ্তাহিক ছুটিসহ দাঁড়ায় টানা ৪ দিনের ছুটি। এই ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকের ঢল নেমেছে সৈকত শহর কক্সবাজারে।
গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, বালিয়াড়িতে ভিড় করেছে লাখো পর্যটক। বালিয়াড়ির সামনে নীল জলরাশিতেও মানুষের ভিড়। সবাই মেতেছেন আনন্দ–উল্লাসে। গাজীপুর থেকে আসা পর্যটক এনামুল হক বলেন, এতো মানুষ কক্সবাজার সৈকতে আর দেখিনি। বালিয়াড়িতে যেমন মানুষ, ঠিক তেমনি নোনাজলেও মানুষে ভরপুর। আমরা প্রায় ২০টি হোটেল ঘুরেছি। কোথাও রুম খালি নেই। তাই নিরুপায় হয়ে সৈকতের বালিয়াড়িতে কিটকট ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছি। সমুদ্রের সৌন্দর্য্য উপভোগ করেই সময় পার করবো। আরেক পর্যটক শায়ান রহমান বলেন, খুব মজা হচ্ছে। এতো মানুষ একসঙ্গে আনন্দ করছি। সাব্বির আহমেদ বলেন, সাগরের নোনাজলে যেমন মজা পাচ্ছি ঠিক তেমনি বালিয়াড়িতে বালু নিয়ে খেলা করতে ভালো লাগছে।
ব্যবসায়ী ও পর্যটকের দেয়া তথ্য বলছে, ছুটি মানেই কক্সবাজারে বাড়তি মানুষের চাপ। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। ৫ শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট এখন পর্যটকে ঠাঁসা। অনেকেই রুম না পেয়ে লাগেজ বা ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছে সৈকতের বালিয়াড়িতে। তারা বলছেন, রুম না পেয়ে কক্সবাজার ছাড়তে হচ্ছে তাদের। রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক ইমতিয়াজ বলেন, বৃহস্পতিবার (গতকাল) সকালে কক্সবাজার পৌঁছানোর পর অনেক হোটেলে গিয়েছি, কিন্তু কোথাও রুম পায়নি। শেষমেশ সৈকতেরর বালিয়াড়িতে লাগেজ ও ব্যাগ নিয়ে বসে আছি। যদি কোনো রুম পাই তাহলে থেকে যাব। না হয় রাতের গাড়িতে রাজশাহী ফিরে যাব।
এদিকে সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সচেনতার পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে লাইফ গার্ড কর্মীরা। সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ ওসমান বলেন, সৈকতে প্রচুর মানুষ। তাদের বেশির ভাগই সাগরে গোসল করছে। তাই সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় কয়েক স্তরের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
হোটেল–মোটেল গেস্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, অনেক হোটেলে রুম খালি আছে। পর্যটকেরা রুম না পেয়ে রাস্তায় অবস্থান করার বিষয়টি আমরা অবগত নয়। আজ শনিবার পর্যন্ত টানা ছুটিতে কক্সবাজারে ৫ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হবে বলে জানিয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।