গল্পটি সংগ্রামী এক মায়ের। সন্তানকে কোলে নিয়ে গলায় বাক্স ঝুলিয়ে পান–সিগারেটের ব্যবসা করছেন এক মা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, এটি কোনো তামিল সিনেমার হৃদয়বিদারক থ্রিলার। তবে না, এটি সিনেমা নয়, এক সংগ্রামী মায়ের জীবনযুদ্ধে হার না মানার গল্প। এ ব্যবসা করে বুকের ধনকে চোখের আড়াল করছেন না এই নারী। ঠিক তেমনি মায়ের জীবনযুদ্ধে সাহায্য করে চলেছে ছোট্ট শিশুটি।
এ গল্প ভাসমান পান–সিগারেট বিক্রেতা বৃষ্টি আক্তারের। চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে প্রায়শ দেখা যায় এই মা–ছেলেকে। পায়ে হেঁটে ঘুরে ঘুরে ব্যবসা করেন এই নারী। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু হয়। গভীর রাত পর্যন্ত এভাবেই চলছে সংগ্রাম।
গ্রীষ্ম–বর্ষা নেই, বছর জুড়ে চলে সংগ্রাম। দৈনিক দুই হাজার টাকার পান–সিগারেট বিক্রি করতে পারলে আয় হয় মাত্র দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। এই টাকা দিয়েই চলে মা–ছেলের জীবন। জানা যায়, শিশু মুজাহিদের বয়স যখন মাত্র এক মাস তখন মা ও ছেলেকে ছেড়ে অন্য নারীর হাত ধরে চলে যান শিশুটির বাবা। সন্তানের আহার যোগাতে তখন মাস ছয়েক ভিক্ষা করেছিলেন মা বৃষ্টি।
বৃষ্টি আক্তার জানান, ভিক্ষা করতে তার লজ্জা লাগে। তাই দুই বছর আগে সামান্য পুঁজি নিয়ে নেমে পড়েন ব্যবসায়। এখান থেকে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোনোরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন তারা। মুজাহিদের বয়স এখন তিন পেরিয়ে চার। বৃষ্টির স্বপ্ন, তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করবেন।
বৃষ্টি আক্তারের বাড়ি বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলায়। নগরীর মুনসুরাবাদে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।
প্রতিবেদনটি পড়ার পর মনে মায়া জাগবে। এগিয়ে আসবে মানুষ। মা–ছেলের পাশে দাঁড়াবে। আশা এতটুকুই।