ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আলোচিত সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের গাড়ি রাখা আছে, এমন তথ্যে ঢাকার খিলক্ষেতে ‘লেকসিটি কনকর্ড’ আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ২ ঘণ্টার অভিযান শেষে লেকসিটি কনকর্ডের বর্ণালী ভবনের নিচের গ্যারেজ থেকে সেখানকার এক ব্যক্তিকে এবং একটি সাদা মাইক্রোবাস নিয়ে চলে যান সেনা সদস্যরা। তবে ওই গাড়ির মালিকের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। খবর বিডিনিউজের।
বর্ণালী ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, কেউ খবর দিছে এখানে ডিবি হারুনের গাড়ি রাখা আছে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে একটি সাদা মাইক্রোবাস পান। পরে তাদের লোকজনই গাড়িটি চালিয়ে নিয়ে চলে যান। অভিযানে সেনা সদস্যরা ভবনের নিচে গাড়ির গ্যারেজেই ছিলেন। ওপরের কোণে বাসায় তল্লাশিতে উঠেননি বলে জানান মোশারফ। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরপরই দাপুটে পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের আটক হওয়ার খবর চাউর হয়েছিল। কিন্তু পরদিন তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তার আটক হওয়ার খবরটি নাকচ করে দেন। রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদলে পুলিশের প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক মামলার আসামি হয়েছেন হারুন। তবে এখন তিনি কোথায় আছেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার খিলক্ষেত লেকসিটি কনকর্ডের বর্ণালী ভবনের নিচে হারুনের গাড়ি রাখা আছে বলে খবর পৌঁছায় সেনাবাহিনীর কাছে। বর্ণালী ভবনের মোশারফ বলেন, শুনছি গাড়িটা ৮–১০ দিন আগে কেউ এনে গ্যারেজে রাখছে। কিন্তু এই ভবনের কেউ এই গাড়ির মালিকানা দাবি করে নাই।
মালিক না থাকলে গাড়ির চাবি কার কাছ থেকে পাওয়া গেল প্রশ্নের উত্তরে মোশাররফ কিছু বলতে পারেননি তিনি। অভিযানে গাড়ি জব্দ ও আটকের বিষয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিএমপির ডিবি প্রধানের দায়িত্ব পালনকালে হারুন তার কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে আসা বিভিন্নজনকে ভাত খাওয়ানো এবং সেসব ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে বেশ আলোচনায় ছিলেন। সবশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীকে নিরাপত্তা দিতে তার কার্যালয়ে কয়েকদিন আটকে রাখেন তিনি। তাদের অ্যাপায়ন করার একটি ছবি আবার আলোচনা তৈরি করে।
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হলে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ উষ্মা প্রকাশ করে বলে, ডিবি অফিসে যাকে তাকে ধরে নিয়ে যাবেন, তারপর খাবার টেবিলে বসাবেন। এভাবে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না। এরপরই গত ৩১ জুলাই তাকে ডিবি থেকে ডিএমপির ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্সে বদল করা হয়। বদলির পর থেকে নিশ্চুপ ছিলেন তিনি।