হামলার সময় আজাদ কাশ্মীরের বাসিন্দারা পালিয়েছিলেন পাহাড়ে

| বৃহস্পতিবার , ৮ মে, ২০২৫ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুপুর রাতে ভারত যখন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তখন তারা বাড়ি থেকে দৌড়ে গিয়ে আশপাশের পাহাড়গুলোতে পালিয়ে ছিলেন। তারা জানান, বিস্ফোরণে মাটি কেঁপে কেঁপে উঠছিল আর শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল, তখন মসজিদের মাইকে আশ্রয় খুঁজে নিতে বলা হয়।

রাতের ওই ঘটনার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে মুহাম্মদ শায়ের মীর (৪৬) বলেন, আমরা বাইরে বের হয়ে আসি। তখন আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। পুরো বাড়ি কেঁপে ওঠে। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, আমরা সবাই সরে যাই, বাচ্চাদের নিয়ে উপরে চলে যাই (পাহাড়ে)। খবর বিডিনিউজের।

রয়টার্স জানিয়েছে, সূর্য ওঠার পর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি মসজিদের কাছে বহু মানুষ জড়ো হয়। মসজিদটির ছাদ ধসে গেছে ও মিনার ভেঙে পড়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। স্থানীয় জেলা কমিশনার জানান, ধসে পড়া ওই মসজিদটির কাছে তিনজন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে চালানো ভারতীয় হামলায় মোট ২৬ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভারতীয় সময় রাত ১টা ৫ মিনিটের দিকে পাকিস্তানে হামলা শুরু করে পরবর্তী ২৫ মিনিট ধরে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। তারা জানায়, হামলায় ‘সন্ত্রাসীদের শিবিরগুলোকে’ লক্ষ্যস্থল করা হয়েছে। এসব শিবির রিক্রুটিং সেন্টার, প্রশিক্ষণ ঘাঁটি, লঞ্চ প্যাড ও অস্ত্র রাখার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল বলে দাবি ভারতের। পাকিস্তান এই হামলাকে ‘নির্লজ্জ যুদ্ধ ক্রিয়া’ বলে বর্ণনা করেছে। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার এক ঘটনা নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকার মধ্যে পাকিস্তানে আঘাত হানল ভারত। তবে ভারত যেসব লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে সেগুলো সন্ত্রাসীদের শিবির ছিল না বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। কাশ্মীরে ভারত ও পাকিস্তানকে বিভক্তকারী নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন জেলাগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল ভোর থেকে দুই পক্ষের সেনাবাহিনীর মধ্যে মর্টার ও হালাকা অস্ত্রের গোলাগুলি শুরু হয়ে এখনও অব্যাহত আছে।

এই গোলাগুলিতে পাকিস্তানের দিকে অন্তত ছয়জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন। ভারতীয় কাশ্মীরের পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে অন্তত ১০ জন নিহত ও প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।

মুজাফফরাবাদে হাসপাতালগুলো চালু আছে আর সকালে কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। কিন্তু স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে আর পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

শায়ের মীর জানান, তিনি ও তার পরিবার খোলা জায়গায় চার ঘণ্টা কাটিয়েছেন। তার কিছু প্রতিবেশী আহত হয়ে হাসপাতালে গেছেন আর বাকিরা আতঙ্কিত হয়ে আছেন। এগুলো ভুল। চারদিকে অসহায় দরিদ্র লোকজন। আমাদের দরিদ্র মায়েরা অসুস্থ, আমাদের বোনেরা অসুস্থ। আমাদের ঘরগুলো কেঁপে উঠেছিল, দেয়ালগুলোতে ফাঁটল ধরেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅপারেশন সিঁদুর কেন
পরবর্তী নিবন্ধবাকলিয়ায় জোড়া খুন : গ্রেপ্তার এক আসামি ৫ দিনের রিমান্ডে