হাটহাজারীতে স্কুল থেকে গায়েব বিনামূল্যের বই পটিয়া থেকে উদ্ধার

হাটহাজারী প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১ জুলাই, ২০২২ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

হাটহাজারীর ফতেপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণের জন্য রাখা বিনামূল্যের বই গত মঙ্গলবার রাতের আঁধারে গায়েব হয়ে যায়। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মহসিন রাতের আঁধারে এসব বই বিক্রি করে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে গায়েব হওয়া বইগুলো পটিয়ার একটি পেপার মিল থেকে জব্দ করা হয়েছে। বিনামূল্যেও এ বইয়ের ওজন সাড়ে ৪ মে. টন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের মিলিটারিপুল এলাকার মোস্তাফা পেপার মিলের গোডাউন থেকে এসব বই উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বই। এর মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, হিসাব বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, সমাজ বিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ও ভুগোল বই রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে একটি ট্রাকে করে প্রায় এক টন বই পাচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল কয়েকজন যুবক। এই বিদ্যালয়ের স্থানীয় কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী চ্যালেঞ্জ করলে ট্রাক ভর্তি করা বইগুলো তারা উপজেলায় নিচ্ছে বলে জানায়। পরে বই বহনকারী ট্রাকটি হাটহাজারীর দিকে না গিয়ে নগরের দিকে যাত্রা করলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সন্দেহ হয়। ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত শিক্ষকসহ আরও কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রশাসনিক ঝামেলায় পড়তে হবে জানিয়ে হুমকি দেন এই সব শিক্ষার্থীদের। উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, আমাদের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কক্ষ সংকটের কারণে বইগুলো ফতেপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের হল রুমে রাখা হয়েছিল। স্কুলের আসবাবপত্র সরানোর কথা বলে আমার কাছ থেকে ওই রুমের চাবি নেন প্রধান শিক্ষক। এরপর তিনি আমাকে আর চাবি ফেরত দেননি। তিনি আরও বলেন, কি পরিমাণ বই চুরি হয়েছে সেটি এখনো বলা যাচ্ছে না।

তবে, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য, ভিডিও ফুটেজ, ট্রাকের অবস্থান ও অভিযুক্ত শিক্ষকের অসংলগ্ন কথা-বার্তায় বোঝা যাচ্ছে, বই চুরি হয়েছে। ধারণা করছি, প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বই নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকসহ চারজন সহকারী ও একজন অফিস সহায়ক, অজ্ঞাত ট্রাক চালকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এ বিষয়ে জানতে ফতেপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মহসিনের মোবাইলে একধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে পেপার মিলের সিনিয়র ডিজিএম আল মামুন বলেন, তাদের পেপার মিলে ওয়েস্টিস প্রায় সাড়ে ৪ মে. টন. পেপার গোডাউনে মজুদ রয়েছে। কে এইগুলো এনেছে তা জানেন বলে জানান।

পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, হাটহাজারী উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাটহাজারী থানা পুলিশ, পটিয়া থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন যৌথ অভিযান চালিয়ে সরকারি বইগুলো উদ্ধার করেছে। হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব শর্মাও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহিদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে গত বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্ধবীর সামনে হিরো হতে শিক্ষককে পেটায় জিতু
পরবর্তী নিবন্ধঅনলাইনে জুয়া খেলা বিকাশে টাকা লেনদেন