দক্ষিণ পাহাড়তলীতে রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির ঘটনার বিষয়ে সমপ্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছেন হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। গত বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার নন্দীরহাটের পশ্চিমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার কয়েকটি স্থানের মধ্যে একটিতে এস্কেভেটরসহ নোয়াখালীর শের আলী নামের এ ব্যক্তিকে পাওয়া গেলেও সে দোষ স্বীকার করে নেয়ায় তাকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এ এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধে অন্যান্য যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়মিত মামলা করবে। অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অভিযানের খবর পেয়ে যাওয়ায় পরিবেশ আইন উপেক্ষা করে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করা প্রভাবশালী দুষ্টচক্রটিও ধরা–ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবিএম মশিউজ্জামান অভিযানের সত্যতার নিশ্চিত করে জানান, পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, সমপ্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে দক্ষিণ পাহাড়তলীতে রাতের আঁধারে পাহাড় কাটার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উল্লেখিত এলাকায় রাতের আঁধারে গত দুই মাস ধরে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি চলছিলো। মাহমুদাবাদের পশ্চিমে আলী (র.) দরগাহ থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে কয়েকটি পাহাড়ের বড় অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা এবং খননযন্ত্র দিয়ে পুকুরের মতো করে মাটি তুলে নেওয়ায় পাহাড়ের একটি বড় অংশ বিলীন হয়ে গেছে। দিনের বেলায় বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন সন্ধ্যা নামার পর থেকে ভোর পর্যন্ত ৮ থেকে ১০টি ডাম্প ট্রাকে করে পাহাড় কাটা মাটি বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর তৈরি বা কবরস্থান ভরাটের জন্য প্রতি ট্রাক মাটি ২৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। মাহমুদাবাদের ১৪–১৫ জন বাসিন্দার একটি চক্র এই পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত। কামাল উদ্দিন নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, এই এলাকায় পাহাড় কাটা নতুন কিছু নয়। পতিত সরকারের সময়েও সেই সরকারের দোসরেরা পাহাড় কেটে প্লট ও মাটির ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছেন। সরকার পরিবর্তনের পর কেবল নিয়ন্ত্রকদের হাতবদল হয়েছে।