হাজী সেলিমের এমপি পদের কি হবে?

১০ বছরের দণ্ড বহাল

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১০ মার্চ, ২০২১ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে দেড় দশক আগের একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছে হাই কোর্ট। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ লাখ টাকা জরিমানাও বহাল রাখা হয়েছে। এ টাকা পরিশোধ না করলে তাকে আরও এক বছর কারাভোগ করতে হবে।
অপরদিকে দণ্ড বহাল থাকায় ঝুঁকিতে পড়েছে হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আমি মনে করি এটি তার (হাজী সেলিম) নৈতিক স্খলন। তিনি সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন স্পিকার। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তা পৌঁছে দেবে।
জানা গেছে, এ মামলা সংক্রান্ত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে। তবে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে বিচারিক আদালত হাজী সেলিমকে তিন বছরের যে কারাদণ্ড দিয়েছিল, দুর্নীতি দমন কমিশন সেই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় উচ্চ আদালত সে অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দিয়েছে।
রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে পুরান ঢাকার এই আওয়ামী লীগ নেতাকে বিশেষ জজ আদালত-৭ এ আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিননামা বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করে।
অন্যদিকে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মারা যাওয়ায় এই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে দণ্ডিত হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরার আপিলটি বাতিল করা হয়েছে। আদালত রায়ে বলেছে, বিচারিক আদালতে রায়ে দণ্ডিত হাজি মোহাম্মদ সেলিমের আপিল সংশোধন করে (আংশিক গ্রহণ ও আংশিক খারিজ) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ ধারা সংক্রান্ত আপিল গ্রহণ করা হল। আর এই আইনের ২৭ (১) এ আপিলের অংশ খারিজ করা হল।
আদালতে হাজী সেলিম ও তার স্ত্রীর আপিলের পক্ষে শুনানি করেন আব্দুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান মনির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তামান্না ফেরদৌস।
ঝুঁকিতে সংসদ সদস্যপদ : এদিকে ফৌজদারি মামলায় এই দণ্ডের কারণে হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ ঝুঁকিতে পড়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো আইনপ্রণেতা নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই কিংবা ততধিক বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হল সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবে না এবং মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি আর সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন না। তবে হাজী সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেছেন, তারা হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। সর্বোচ্চ আদালতে এ মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ থাকবে বলে তার ধারণা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে করোনার টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ছাড়াল সাড়ে ৩ লাখ
পরবর্তী নিবন্ধবনবিভাগের জায়গা থেকে অবৈধ ঘর উচ্ছেদ