হল্যান্ড থেকে

বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া | শনিবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২০ at ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ

বুদ্ধের পুণ্যস্মৃতি বিজড়িত ‘বুদ্ধগয়া’ -১
বুদ্ধগয়া যাব ঠিক করেছি অনেকদিন ধরে। না, তীর্থের কারণে নয়। মহামতি গৌতম বুদ্ধ যে স্থানটিতে বুদ্ধত্ব লাভ করেছিলেন সেই পরম পুণ্য-স্থানটি না দেখলে এই জীবনটাই বৃথা এমন একটি ধারণা থেকে এই ইচ্ছে তীব্র হচ্ছিল অনেক দিন ধরে। ব্যাটে-বলে মিলছিল না বলে এদ্দিন যাওয়া হয়ে উঠেনি। করোনা আবির্ভাবের মাস খানেক আগে সেখান থেকে ঘুরে এলাম এক ধরনের প্রশান্তি, অপূর্ব ভাললাগা আর অভিজ্ঞতা নিয়ে। বুদ্ধগয়ায় আমাদের পৌঁছাটা খুব একটা সহজ হয়ে উঠতে পারেনি। হতে পারতো, কিন্তু যার উপর সেখানে আমাদের যাওয়া-থাকার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সে তা করেনি, উল্টো সব এলোমেলো করে দিয়েছিল আমাদের সময় ও অর্থের বারোটা বাজিয়ে। যাই হোক, দীর্ঘ গাড়ি-পথ পেরিয়ে চালক সহ আমরা পাঁচটা প্রাণী বিহারের গয়া শেষে যখন বুদ্ধগয়া পৌঁছুলাম তখন গভীর রাত। ঘড়ির কাঁটায় প্রায় তিনটে। পুরো বুদ্ধগয়া তখন ঘুমিয়ে। ক’টি নেড়ি কুকুর এদিক-ওদিক ঘুরঘুর করছে, আর মাঝে মাঝে রাতের নীরবতা ভেঙে ঘেউ ঘেউ করে ডেকে উঠছে। শীতের কারণে রাস্তার ধারে ল্যাম্প পোস্টগুলি ঝাপসা ঝাপসা দেখাচ্ছে। দূর থেকে বুদ্ধগয়া ঢোকার পথে বিশাল ও দর্শনীয় তোরণ দৃষ্টিতে আসার সাথে সাথে মনের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা দেখা দেয়। সারা দিনের ক্লান্তি, দীর্ঘ জার্নির ধকল মুহূর্তে কোথায় উবে যায়। সোজা হয়ে সীটে বসি। দৃষ্টি ছুঁড়ে দেই সামনে। শিহরণ জাগে এই ভেবে আমি অবশেষে এসে পৌঁছেছি সেই পুণ্যস্থানে যেখানে আজ থেকে আড়াই হাজারেরও বেশি বছর আগে ধ্যানে বসেছিলেন গৌতম বুদ্ধ, অর্জন করেছিলেন বুদ্ধত্ব। দিকে দিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন শান্তির বাণী। বুদ্ধদেবের পুণ্যস্মৃতি বিজড়িত বুদ্ধগয়ায় এসেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তার দলবল নিয়ে। বুদ্ধগয়ায় এসে কবির মনে যে অনুভূতি হয়েছিল তার বর্ণনা তিনি দিয়েছিলেন অনেক বছর পর। তিনি লিখেছেন, “একদিন বুদ্ধগয়াতে গিয়েছিলাম মন্দির দর্শনে, সেদিন এই কথা আমার মনে জেগেছিল- যার চরণস্পর্শে বসুন্ধরা একদিন পবিত্র হয়েছিল, তিনি যেদিন স্বশরীরে এই গয়াতে ভ্রমণ করেছিলেন, সেদিন কেন আমি জন্মাইনি, সমস্ত শরীর মন দিয়ে প্রত্যক্ষ তাঁর পুণ্যপ্রভাব অনুভব করিনি?” কবির মনে বুদ্ধগয়ার প্রথম দর্শনে যে এমনটি মনে হয়েছিল সেটি জানা ছিল না। সেটি জানা হলো তার মাস কয়েক পর যখন ফিরে আসি স্বস্থানে। যেটি লক্ষ্যণীয় তা হলো, পরিদন খুব ভোরে যখন হাজারো পুণ্যার্থীর সাথে পায়ে হেঁটে এগিয়ে চলেছি সেই পুণ্য স্থানটিতে যেখানে গভীর ধ্যানে বসে এই মহামানব অর্জন করেছিলেন বুদ্ধত্ব, মনের মধ্যে আপনাতেই এই কথাটি বারবার উঠে আসছিল, ‘কী দারুণ হতো যদি বুদ্ধের সময়ে আমার জন্ম হতো’। পরে আবিষ্কার করলাম রবি ঠাকুরের মনে অনেকটা এই কথা মনে হয়েছিল। কবির বয়স যখন ৪৩ বছর ৫ মাস ঠিক তখন তিনি ১৯০৪ সালের ৮ অক্টোবর হাওড়া স্টেশন থেকে তার ছেলে রথীন্দ্রনাথ, তার সহপাঠী সন্তোষচন্দ্র মজুমদার, জগদীশ্চন্দ্র বসু, ত্রিপুরার কর্নেল মহিম ঠাকুর সহ প্রায় ২০ জন যাত্রা করেন বুদ্ধগয়ার উদ্দেশ্যে। তবে তাদের যাত্রা প্রায় বাতিল হবার পথে ছিল কেননা হঠাৎ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন মহর্ষির বয়স ৮৮। কিন্তু ক’দিনের মাথায় মহর্ষি সুস্থ হয়ে উঠেন এবং কবির বুদ্ধগয়া যাত্রা অপরিবর্তিত রইলো। মহামতি বুদ্ধের প্রভাব কবির জীবনে, চিন্তা-চেতনায়, সংগীতে, লেখায় আমরা দেখতে পাই নানা সময়ে। সে প্রসঙ্গে পরে কোন এক সময় আসবো।
এখন আসি আমাদের বুদ্ধগয়া ভ্রমণে। কথা ছিল কলকাতা থেকে রাতের ট্রেনে বুদ্ধগয়া যাবো। সেই মোতাবেক কলকাতায় আমার এক আত্মীয়ের কাছে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে টাকাও পাঠানো হয়েছিল হল্যান্ড থেকে। একদিন ফোন করে সেই আত্মীয় বললে, ‘আমি এখন স্টেশনের টিকেট কাউন্টারে দাঁড়িয়ে, এখনই টাকা পাঠাও এবং এখন টিকেট না কাটলে পরে পাওয়া যাবে না’। কথা ছিল প্রথম শ্রেণীর এসি কামরা যেন বুক করা হয় যাতে একটু আরামে যাওয়া যায়। দূরত্বের কারণে গাড়িপথ বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা পৌঁছে বুদ্ধগয়া যাত্রার দিন সকালে জানানো হলো ট্রেনের টিকেট পাওয়া যায়নি। কারণ জানতে চাইলে একটার পর একটা অজুহাত দেখানো হলো। মেজাজটা খুব বিগড়ে গেল, কিন্তু মাথা ঠাণ্ডা রেখে অপেক্ষায় রইলাম গাড়ির। গাড়ি এলো, জীপ, পুরানো গোছের, ভাঙাচোরা। দেখেই ভড়কে গেলাম, দীর্ঘ ১২/১৩ ঘণ্টার গাড়িপথ, এই গাড়ি কী করে এত দীর্ঘপথ পাড়ি দেবে। কিন্তু তখন আর করার কিছু নেই। যাকে তার কথা অনুয়ারি আগ বাড়িয়ে টাকা দিয়েছিলাম সে যে কোথাও একটা গোলমাল করেছে সে অনুধাবন করতে আর অসুবিধে হলো না। ভাগ্য তাও ভালো এই ভাঙা গোছের গাড়িতে এসি কাজ করছিল, তা না হলে বিহার যাবার পথে যে ধুলো তা নাকে-মুখে এসে যে কী ভোগান্তি হতো তা সহজে অনুমান করতে পারি। আমাদের যাত্রা হলো শুরু, দুপুর একটা নাগাদ। মনের মধ্যে একটা সংশয় ছিল, ঠিকমত গাড়ি পৌঁছুবে তো? গাড়িতে উঠে জানতে পারলাম, বুদ্ধগয়ায় থাকার কোন ব্যবস্থা তখনও হয়নি। যার উপর টিকেটের দায়িত্ব দিয়েছিলাম তারই হোটেল বুক করার কথা। যখন জানলাম করেনি, তখন ইতিমধ্যে বিগড়ে থাকা মেজাজটা আরো গেল বিগড়ে। কিন্তু সব সহ্য করে বসে রইলাম। গাড়িতে বসে ঢাকায় মেজদাকে ফোন করে অনুরোধ করি সে যেন আমাদের চারজনের জন্যে বুদ্ধগয়ায় বাংলাদেশি মালিকানায় (বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ) বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মনেস্ট্রিতে দুটি এসি-কামরা বুক করে রাখে। ড্রাইভার থাকবে গাড়িতেই। এই ধরনের ব্যবস্থায় এখানকার চালকরা অভ্যস্ত, সেটাই নাকি রীতি, যদিও বা তা আমার কাছে খুব একটা ভালো ঠেকেনি। যাই হোক, ওই মন্দিরের যিনি উপাধ্যক্ষ, করুনা জ্যোতি থেরো (দুঃখের সাথে লিখতে হচ্ছে সপ্তাহ দুয়েক আগে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা গেছেন), তার সাথে মেজদার ভালো যোগাযোগ ছিল। মেজদা যেবার ওই মন্দিরে প্রব্যাজা নিলেন ওনার সাথে একই কামরায় ছিলেন দিন কয়েক। ওই মন্দিরে বিদেশ থেকে আসা অতিথি ও তীর্থ যাত্রীদের জন্যে কম মূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। মেজদা খানিক বাদে ফোন করে জানালে, থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের পৌঁছার কথা রাত ন’টা নাগাদ। সেটি অনুমান-নির্ভর। কিন্তু মাঝপথে দুপুরের লাঞ্চ, রাতে প্রায় দুটোর দিকে রাস্তার ধারে তখনও খোলা চায়ের দোকানে তৎক্ষণাৎ হাতে বানানো আটার রুটি আর মামলেট খেয়ে, যখন বুদ্ধগয়া পৌঁছলাম তখন রাত তিনটে। গাড়ি বুদ্ধগয়া-মুখী প্রধান সড়ক দিয়ে ঢুকতেই কড়া পুলিশী নিরাপত্তা। জানালে, এই রাস্তা দিয়ে বাংলাদেশি বৌদ্ধ মন্দিরে যাওয়া যাবে না। ঘুরে যেতে হবে। সেটি ঘুরে এক সময় গাড়ি গিয়ে পৌছুলো বড় এক গেইটের সামনে। দারোয়ানকে বোধ করি বলে রাখা হয়েছিল যে আমরা আসবো। হিন্দীতে আমাদের আসার কথা ছিল জানাতেই গেইট খুলে দিলো। বিশাল এলাকা জুড়ে এই বৌদ্ধ মন্দির। এক কথায় চমৎকার। সামনে সুন্দর বাগান। প্রবেশ-গেইটের পাশে বিশাল বুদ্ধমূর্তি। সে প্রসঙ্গে লিখবো পরে।
আমাদের অফিস কক্ষের দিকে যেতে বলে দারোয়ান চলে গেল গেইটের দিকে, তার ডিউটিতে। দেখি গেরুয়া বসনে এক তরুণ বৌদ্ধ ভিক্ষু (বোধ করি শ্রমণ হবে) এগিয়ে এলেন। বুঝতে পারি ঘুম থেকে উঠে এসেছেন। আমাদের দেখে অনেকটা বিরক্তির সুরে ‘আপনাদের তো রাত ন’টায় আসার কথা’, বলে তালা খুলে অফিস রুমে গিয়ে বসলেন। আমাদের পাসপোর্ট চাইলে বাড়িয়ে দিলাম। তিনি আমাদের পাসপোর্ট দুটি হাতে নিয়ে ড্রয়ারের রেখে বললেন, আগামীকাল সকালে নেবেন। সুমনা আর আমার দুজনের ইউরোপীয় পাসপোর্ট। আর যাই হাতছাড়া করা যায় না কেন, বিদেশে পাসপোর্ট কোনভাবে হাতছাড়া করা বুদ্ধিমানের কাজ না। তাকে বলি, পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিলে ভালো হয়। কিছুটা বিরক্তির সাথে ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, আপনাদের বিশ্বাস হলো না। তারপর আমাদের নির্দিষ্ট দুটি রুম দেখিয়ে চাবি দিলেন। এক পর্যায়ে মশার স্প্রে করলেন। একি, কোথায় এসি কামরা, এ দেখি ‘গণ-কামরা’। তার আগে ওই শ্রমণ বললেন, ‘আপনাদের চারজনের জন্যে একটা কামরা দেই’? অবাক হলাম, বিরক্তও। তরুণ এই বৌদ্ধ শ্রমণ দেখতে সুন্দর, কিন্তু অসুন্দর তার আচরণ। কোন অতিথি এলে তাদের সাথে ভদ্র ও সৌজন্যমূলক আচরণ আশা করেন সবাই। আমরাও। অথচ যিনি বিহারাধ্যক্ষ, ড. কল্যাণ প্রিয় ভিক্ষু পরদিন খুব ভোরে দেখা হলে কী সুন্দর অভর্থ্যনাই না জানালেন আমাদের সবাইকে। তার ব্যবহারে মুগ্ধ হলাম, আমাদের ঘুরে ঘুরে দেখালেন বিশাল হলঘরের ছবিগুলি। তার ব্যবহার দেখে গতরাতে তরুণ শ্রমণের রূঢ় আচরণের কথা ভুলে গেলাম। ভেবেছিলাম বিহারাধ্যক্ষকে বলবো বা পরে লিখবো। কিন্তু কী ভেবে আর লিখিনি।
তবে একটা কথা বলতেই হয়, গাড়িপথ দীর্ঘ হলেও পুরো ভ্রমণটা আমার খুব একটা মন্দ লাগেনি। কলকাতা ছেড়ে ঘণ্টা আড়াই পর, শক্তিগড়ে গাড়ি থামিয়ে রাস্তার ধারে সুন্দর একটি রেস্তোরাঁয় বসে লাঞ্চ সারলাম। গার্লিক পরোটা আর মুরগির ভুনা ছিল চমৎকার। চমৎকার ছিল কলকাতা থেকে বিহার যাবার গোটা হাইওয়ে। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না হয়তো। বেশ চওড়া রাস্তা, পরিস্কার, ঝকঝকে। ভাবতে পারিনি এমন সুন্দর হাইওয়ে পাব ভারতে, বিশেষ করে কলকাতা টু বিহার। সব চাইতে যেটি বেশি ভালো লেগেছিল তা হলো, চলমান গাড়ি, বিশালদেহী ট্রাকগুলির মাঝে কোন প্রতিযোগিতা নেই। কেউ কাউকে নিয়ম ভেঙে এগিয়ে যেতে দেখিনি গোটা পথে। দেখে মনে মনে ভাবি, ‘তুমি কোথায় বাংলাদেশ’? কাউকে দেখলাম না কোথাও ট্রাফিক সিগন্যাল না মেনে এগিয়ে যেতে। একই দৃশ্য দেখেছিলাম বছর দুয়েক আগে কাঠমুন্ডু গিয়ে। বাংলাদেশে যে কবে এমন নিয়ম-মেনে চলার দৃশ্য দেখবো কে জানে। এই জীবনে না সে নিশ্চিত জানি। যাই হোক, গাড়ি এগিয়ে চলে। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত। রাতে বাইরের দৃশ্য অপূর্ব। কলকাতাকে পিছু রেখে আমরা হাওড়া, হুগলী, বর্ধমান, ঝাড়খণ্ড ফেলে এগিয়ে চলি। এক সময় বিহারে এসে পড়ে আমাদের বাহন। আঁধার নেমেছে অনেক আগেই। চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সামনের দিকে এগিয়ে যাবার রাস্তায় কোথায়ও কোন নিয়ন বাতি নেই। মনের মধ্যে ভয় লাগার কথা থাকলেও কেন জানি সে ভয়টা খুব একটা আসেনি। অন্ধকারে কেবল গাড়ির হেড লাইট আর চাঁদের আলোয় রাস্তার দুপাশে উঁচু কয়লার পাহাড় দেখা যাচ্ছিল, যেন বিশাল দেহী অসুর দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। রাত বেড়ে চলেছে। দুপুরে লাঞ্চের পর আর খাওয়া হয়নি। গাড়িতে যা ছিল তাই সাবাড় করে চলেছি আমরা। খাবারের চাইতে বেশি উদ্বিগ্ন ছিলাম কখন বুদ্ধগয়া পৌঁছাবো এই চিন্তায়। গয়া ফেলে বুদ্ধগয়া। এক সময় পৌঁছুলাম গয়া। সেখান থেকে বুদ্ধগয়া আরো ঘণ্টা দেড়েক পথ। তখন রাত প্রায় দেড়টা। যখন সেখানে গিয়ে পৌঁছাবো সব দোকান-পাঠ থাকবে বন্ধ, স্রেফ উপোস করা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। ভাগ্য ভালো, রাস্তার ধারে একটি চায়ের দোকানে তখনও মিটিমিটি লো-পাওয়ারের বাল্ব জ্বলতে দেখলাম। দু-একজন লোক, বুঝি খদ্দের, ট্রাক ড্রাইভার, দেখা যাচ্ছে। শীতের কারণে সবার গায়ে চাদর দিয়ে মাথা, কান ঢাকা। স্বাভাবিক সময় হলে এই হোটেলে খাবারের চিন্তা মাথায় আসতো না। কিন্তু ওই মুহূর্তে হাতের কাছে যাই পাওয়া যায়, তাই সই। গাড়ি থেকে নেমে আমরা সবাই দোকানের সামনে গিয়ে পৌঁছুতেই স্থানীয় ভাষায় দোকানি, কর্মচারী আমাদের অভর্থ্যনা জানায়। একদিকে গ্যাসের চুলা, তাতে বানানো হচ্ছে আটার রুটি। জানতে চাইলাম, ‘খাবার আছে’? বললো, ‘ভাজি, ডিম আর রুটি’। ভেতরে কয়েকটি টুল পাতা। আমরা বসে পড়ি। গরম গরম রুটি আর ডিম- মন্দ লাগলো না। খাওয়া শেষে আমাদের আবার চলা শুরু। গন্তব্য-বুদ্ধগয়া।

লেখক : প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট

পূর্ববর্তী নিবন্ধলক্ষ্যই জীবনের গতিধারা নির্ণয় করে
পরবর্তী নিবন্ধবিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ