হযরত শায়খ মহিউদ্দীন আবদুল কাদের জিলানী (র.) এমন এক যুগ সন্ধিক্ষণে আবির্ভূত হন যখন ভিন্ন ধর্মীয় দর্শন মুসলিম শিক্ষা ও চিন্তার জগতে বিভ্রান্তির কালো থাবায় নিমজ্জিত ছিল। হযরত বড় পীর আবদুল কাদের জিলানীর (র.) অসাধারণ জ্ঞান সাধনা ও আধ্যাত্মিকতার সর্বোচ্চ মকামে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তারই প্রভাবে সমস্ত মুসলিম জাতির মধ্যে যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল তা থেকে মুসলিম উম্মাকে মুক্তি দিতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে উম্মতে মোহাম্মদীকে পুনর্জীবন দান করেছিল। এ জন্যই তাঁকে মহিউদ্দীন উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল। হুজুর গাউছে পাকের আধ্যাত্মিক ছাঁয়ায় আধ্যাত্মিক জগতের উঁচু মকামে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন প্রখ্যাত অলিয়ে কামেল, আমিনে মিল্লাত, ফকিহে বাঙাল, আল্লামা মুফতি আমিনুল ইসলাম হাশেমী (রহ.)।
হুজুর গাউছে পাকের ইশারাই হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহ.) দরগাহ্ শরীফে আমিনে মিল্লাত আল্লামা আমিনুল ইসলাম হাশেমী (রহ.) হুজুর গাউছে পাকের বেলায়েত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রত্যেক বছর হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহ.) শাহী জামে মসজিদে শুরু করেছিলেন ওরসে গাউছুল আজম দস্তগীর (রা.)’র কনফারেন্স। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও আমরা এই আয়োজন করতে পেরে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গাউছুল আজম (রা.)’র কনফারেন্স মাহফিলে বিদেশী মেহমানদের দাওয়াত ছিল। কিন্তু, মেহমানদ্বয় চট্টগ্রামে ফ্ল্যাইট না থাকার কারণে দিনাজপুর থেকে ঢাকা অভিমুখে গমনের জন্য বিমানে উঠলে ঐ বিমান প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঢাকা বিমান বন্দরে অবতরণ করতে না পেরে হুজুর গাউছে পাকের উছিলায় বাধ্য হয়ে চট্টগ্রামে অবতরণ করেছিল। এ সুবাদে গাউছুল আজম (রা.)’র কনফারেন্স মাহফিলের মেহমানদ্বয় যথাসময়ে হুজুর গাউছে পাকের এ মাহফিলে যোগদান করতে সক্ষম হন।
এর থেকে প্রমানিত হয় হুজুর গাউছে পাক (র.) এর সাথে আমিনে মিল্লাতের এক রুহানি সম্পর্ক বিরাজমান ছিল যার বদৌলতে এধরনের কেরামত সুসংগঠিত হয়েছিল তা কাদেরীয়ার ত্বরিতার ইতিহাসে বিরল। গত ১৪ ও ১৫ অক্টোবর ২০২৪ইং রোজ সোম ও মঙ্গলবার হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহ.) দরগাহ্ প্রাঙ্গনে ২ দিনব্যাপী ওরসে গাউছুল আজম দস্তগীর (রা.)’র কনফারেন্স—এ সমাপনী দিনে সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা শাহ্ সুফী কাযী মুহাম্মদ ছাদেকুর রহমান হাশেমী উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
আঞ্জুমানে আশেকানে মোস্তফা (দ.) ট্রাস্ট, আশেকানে মোস্তফা (দ.) তরুণ পরিষদ, শাহ আমিনিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ ব্যবস্থাপনায় জা’নশীনে আমিনে মিল্লাত, আল আমিন হাশেমী দরবার শরীফ’র সাজ্জাদানশীন ও আঞ্জুমানে আশেকানে মোস্তফা (দ.) ট্রাস্টের সভাপতি পীরে ত্বরিকত আল্লামা শাহ্ সুফী কাযী মুহাম্মদ ছাদেকুর রহমান হাশেমী (মাঃজিঃআঃ)’র সভাপতিত্বে ও আল্লামা হাফেজ খালেদুর রহমান হাশেমী’র সঞ্চালনায় গাউছুল আজম দস্তগীর (রা.)’র কনফারেন্স মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান আলোচক ছিলেন লালিয়ারহাট হোসাইনীয়া সিনিয়র মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তৈয়ব আলী (মা.জি.আ.)।
বিশেষ বক্তা ছিলেন প্রখ্যাত ওয়াজিম আল্লামা হাফেজ আজিজুল হক হোছাইনী, কাটিরহাট হযরত শাহজাহান শাহ্ (রহ.) দরগাহ জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব আল্লামা হাফেজ শিব্বির আহমদ ওসমানী, মাওলানা ফরিদুল আলম রেজভী। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মাওলানা বশির আহমদ জেহাদী, মাওলানা আবদুল হাই আল কাদেরী, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহজাদা কাযী মুহাম্মদ সাজেদুর রহমান হাশেমী, শাহজাদা কাযী মুহাম্মদ সফিরুর রহমান হাশেমী সাকিব, আলহাজ্ব সৈয়দ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সাহেব, হাজী মুহাম্মদ আবদুর রহমান ভুঁঞয়া, মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, আঞ্জুমানে আশেকানে মোস্তফা (দ.)’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ নাজমুল হাসান ও দেশবরেণ্য প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরামগণ, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিবর্গবৃন্দ। পরিশেষে মিলাদ কেয়াম, আখেরী মোনাজাত ও তবারুক বিতরণের মাধ্যমে ২ দিনব্যাপী ওরসে গাউছুল আজম দস্তগীর (রহ.) কনফারেন্স সমাপ্ত হয়।