নগরীর কাজেম আলী বাই লেইনের খলিফা পট্টি সড়ক দখল করে ট্রাক রাখার প্রতিবাদ করায় দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় আবদুল মোনাফ সিকদার ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে তিনি এ অভিযোগ করেন। ওই ট্রাকটি থেকে আবদুল মোনাফ সিকদারের ভবন নির্মাণের জন্য টাইলস নামানো হচ্ছিল। কাউন্সিলর হাসনী আইন অমান্যকারী, সিডিএর নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণকারী ও তার প্রাণনাশের হুমকি দাতাদের বিচার চেয়েছেন।
কাউন্সিলর হাসনী বলেন, গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে খলিফা পট্টি রোডে বড় একটি ট্রাক ছোট গলিতে টাইলস আনলোড করছিল। এতে রাস্তার উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। ওই সময় শহরে বড় ট্রাক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উল্লেখ করে হাসনী বলেন, তখন আমি আমার পৈতৃক বাড়ি থেকে বের হতে গিয়ে রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য গাড়িসহ আটকা পড়ি। আমি ওই ট্রাকের ড্রাইভারকে অনুরোধ করি সিরাজদ্দৌলা রোডে গিয়ে অবস্থান করে রাত বারোটার পর এসে টাইলস আনলোড করতে।
ট্রাকটি যখন গলি থেকে বের করা হচ্ছিল তখন কোতোয়ালী থানার এএসআই হামিদুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এএসআই হামিদুল অভিযোগের সুরে আমাকে জানান, আবদুল মোনাফ সিকদার আমার নাম ব্যবহার করে প্রায় সময় এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেন। কাউন্সিলর হাসনী জানান, ট্রাকটি বের করার সময় ধাক্কায় তার গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় আবদুল মোনাফ সিকদার ও তার দুই ছেলে, দারোয়ানসহ অন্যান্যরা হাসনীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন এবং র্যাবের মাধ্যমে ক্রসফায়ারের হুমকি দেন। তিনি বলেন, তারপরও আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে শান্তভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি। এলাকার লোকজন নিয়ে স্থান ত্যাগ করি।
হাসনী বলেন, রাত ১১টার দিকে আবদুল মোনাফ সিকদার, তার দুই ছেলে এবং আত্মীয়-স্বজন, গলির দারোয়ান ও সুপারভাইজারকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে ১২টার আগে ট্রাক ঢুকানো নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয়। সুপারভাইজার আমাকে কল করলে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি। তারা আবারো আমার দিকে গালিগালাজ করতে করতে তেড়ে আসে। পুরো ঘটনা ওসি কোতোয়ালীর নির্দেশে এএসআই হামিদুল মোবাইলে ধারণ করেন। এর মধ্যে বঙিরহাট ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আইয়ূব, তার কিছুক্ষণ পর ওসি কোতোয়ালী ও এসি কোতোয়ালী ঘটনাস্থলে আসেন। প্রশাসনের অনুরোধেও তারা তাদের আচরণ পরিবর্তন না করে গালাগাল দিতে থাকলে আমি চলে আসি।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন এ বিষয়ে আজাদীকে বলেন, বিভিন্ন অলি-গলিতে ভবনের নির্মাণকাজের জন্য সামগ্রী নিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায়। এ জন্য গলিতে যানজট সৃষ্টি হয়। দেওয়ানবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মাহমুদ হাসনী রাত ১২টার আগে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে ট্রাক প্রবেশের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন। গত শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে আমরা সেখানে যাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
এদিকে কাউন্সিলর হাসনীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছে কাজেম আলী বাই লেইন ও ফতেহ আলী মাতব্বর লেইন মহল্লা কমিটি। গতকাল বিকাল ৫টায় আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় আবদুল মোনাফ সিকদার ও তার দুই পুত্রকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা। অধ্যাপক অসীম চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় ও বীর মুক্তিযোদ্ধা খাইরুল ইসলাম কলির সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, শওকত আলী, মোস্তাক আহমেদ, মুসলীম আলী জনি, অ্যাডভোকেট কাঞ্চন বিশ্বাস, প্রদীপ চৌধুরী, শাশ্বত চৌধুরী লিটু, মঞ্জুরুল হক প্রমুখ।