চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেছেন, কোভিড ভ্যাকসিন কার্যক্রম সাফল্যের সাথে শুরু হলেও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা সংক্রমণের হার আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আবার কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারের নির্দেশনা মতে মাস্ক পরিধানসহ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সমুদ্র সৈকত, পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযানের পাশাপাশি মানুষের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তাছাড়া গণপরিবহনে যাত্রীদের মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নগরীর তিনটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হবে। যাদের মাস্ক থাকবেনা তাদের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হবে। জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএর এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে এ সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, যতদিন করোনা সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী থাকবে ততদিন জনগণের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি নগরীর স্টেডিয়াম, সিআরবি, বাদামতলী মোড়, বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক ও সী-বীচসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিএনসিসি, স্কাউট, রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইড, রেড ক্রিসেন্ট ও এনজিও প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে সকলের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তাছাড়া জেলা ও নগরীর সকল কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে ১০০ জনের অধিক অতিথির সমাগম নিষিদ্ধ করে মালিকদের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান পরিচালনা না করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সকল মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দুরত্ব মেনে নামাজ আদায়ের বিষয়টি আগামী শুক্রবার জুম্মার খুৎবার আগে প্রচার করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভূমিকা রাখবে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, অসচেতনতার কারণে কোভিড পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। করোনা রোগীদের সুচিকিৎসায় আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল-২ হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৫০টি শয্যা প্রস্তুত রয়েছে। নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালগুলোতে ৬০/৭০টি আইসিইউ বেড রাখা হয়েছে। মুমুর্ষ রোগীদের জন্য হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা অত্যন্ত জরুরি। চমেক হাসপাতালে ৮০টি, জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিআইটিআইডিতে ১০টি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে এগুলো ব্যবহার করা হবে। আমরা সকলে সচেতন হলে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জরুরি সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ সুমনী আক্তার, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ হাসান, জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. নুরুল হায়দার, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কফিল উদ্দিন, সিটি কর্পোরেশনের জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাসান মুরাদ চৌধুরী ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া।