নিঃসন্তান বোনের দুঃখ ঘোচাতে নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকার বাসা থেকে দেড় বছর বয়সী নিজের শিশু সন্তানকে বোনের হাতে তুলে দেন মাবিয়া খাতুন নামে এক নারী। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল হান্নান থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মায়ের সম্পৃক্ততা পান। পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল শিশু হাবিবুর রহমান রোহানকে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম ছাগলনাইয়া গ্রামে নজির আহমদের ভাড়াঘরে তার খালার বাসা থেকে উদ্ধার করা করে। একইসাথে মা মাবিয়া খাতুন (৩৩) ও খালা শাহেনা আক্তারকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার দু্জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর দুটার দিকে বাসা থেকে নিখোঁজ হয় রোহান। তার বাবা আব্দুল হান্নান প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হন, অজ্ঞাতনামা এক নারী আরও কয়েকজনের সহযোগিতায় রোহানকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি থানায় ছেলেকে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন দুপুরে তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস সুমাইয়া ও ছেলে হাবিবুর রহমান রোহান ঘুমাচ্ছিল। তার স্ত্রী মাবিয়া বাথরুমে গোসল করছিলেন। তখন বাসায় অজ্ঞাতনামা নারীসহ কয়েকজন ঢুকে রোহানকে নিয়ে যান। মামলা তদন্তের শুরুতেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে আমাদের কাছে মাবিয়া খাতুনের বিষয়ে সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মাবিয়া জানান, তার বড় বোন শাহেনার কোনো সন্তান নেই। এ নিয়ে স্বামী আব্দুল মান্নানের সঙ্গে তার প্রায়ই ঝগড়া হয়। শাহানা সবসময় কষ্টের কথা মাবিয়াকে বলতেন। তখন মাবিয়াই তার স্বামীর অবর্তমানে নিজের ছেলেকে শাহেনাকে দিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হন। তদন্তে পাওয়া গেছে, মাবিয়া নিজেই ছেলেকে কর্ণেলহাট এলাকায় নিয়ে শাহেনার হাতে তুলে দেন। এরপর তাকে নিয়ে চলে যান শাহেনা। এই তথ্য পাওয়ার পর আমরা মাবিয়াকে গ্রেপ্তার করি। ফেনীতে শাহেনার বাসায় অভিযান চালিয়ে তার হেফাজত থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করি এবং তাকেও গ্রেপ্তার করি।