বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামী নেতাজী সুভাষ বসুর সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ইতিহাসে দু’জন বাঙালি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। একজন হচ্ছেন নেতাজী সুভাষ বসু। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আরেকজন হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। আর কোনো বাঙালি যুদ্ধের ঘোষণা দেননি। সমস্ত বাঙালিকে যুদ্ধক্ষেত্রে আর কোনো বাঙালি ডেকে আনেননি। কই, ভারতীয়রা তো নেতাজী সুভাষ বসুকে অসম্মান করেনি। তার নামে বিমানবন্দর আছে। তাকে দলমত নির্বিশেষে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এসব সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিয়েছে। রাজনীতিবিদদের প্রতি রাজনীতিবিদদের শ্রদ্ধা জানানোর যে প্রবণতা সেটা আওয়ামীলীগ বিলীন করে দিয়েছে। গুণীদের যদি আমরা সম্মান না করি আগামীতে কোনো গুণীর জন্ম হবে না। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিদ্রোহ চট্টগ্রাম থেকেই হয়েছে। তাই চট্টগ্রামের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধকালীন সময়ে অবিস্মরণীয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে নীরব ছিলেন না। এদেশের সেনাবাহিনীকে সংগঠিত করে তিনি পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন চট্টগ্রাম থেকেই। তিনি স্বাধীনতার পরের সরকারের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে দেশকে বের করে নিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শহীদ জিয়ার অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।
জিয়াউর রহমানের ৪০ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা সম্পাদিকা নুরী আরা ছাফা, বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার।
আমীর খসরু বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের পথচলা যখন বারংবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল ঠিক তখন রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কারণে অতি অল্প সময়েই বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা ফেলে স্বনির্ভর বাংলাদেশের পথে চলতে শুরু করে। শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কর্মকান্ড শুরু করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, জিয়াউর রহমান কাউকে হত্যা বা ক্যু করে ক্ষমতায় আসীন হননি। জনগণের আহবানে দেশ ও জাতিকে পথ দেখানোর জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। জিয়াউর রহমান সেই বাকশাল বিলুপ্ত করে বহুদলীয় ক্ষমতায়নের প্রবর্তন করেছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। কৃষি থেকে শুরু করে রেমিটেন্সসহ অর্থনীতির চাকা সচল হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন সেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর ১৯ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো। কিন্তু দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের কারণে তিনি তা করতে পারেনি।
মহানগর বিএনপির সদস্য কামরুল ইসলামের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মো. মিয়া ভোলা, আবদুল মান্নান, সদস্য হারুন জামান, মাহবুবুল আলম, এস এম আবুল ফয়েজ, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, মনজুরুল আলম চৌধুরী মনজু, কোতোয়ালী থানা বিএনপির সভাপতি মনজুর রহমান চৌধুরী, পাঁচলাইশ থানার সভাপতি মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, ডবলমুরিং থানার সভাপতি মো. সেকান্দর কমিশনার, চকবাজার থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন, সদরঘাট থানার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, মহিলা দল নেত্রী জেলি চৌধুরী।










