তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসীকে স্বস্তি দিয়েছে শ্রাবণের বৃষ্টি। আবার এ বৃষ্টি অস্বস্তিরও কারণ হয়ে উঠে। জলাবদ্ধতার ভোগান্তিই এ অস্বস্তির কারণ। বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট, রাস্তাঘাট ও হাসপাতালে পানি ঢুকে যাওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ে নগরবাসীর। বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সকালে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবী এবং দরকারি কাজে বের হওয়া পথচারীরা। জলাবদ্ধতার অজুহাতে সিএনজি ও রিকশা চালকরা বাড়তি ভাড়া দাবি করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঋতুচক্রের হিসাবে চলছে বর্ষাকাল। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টির দেখা মিলেনি চট্টগ্রামে। এসময়ে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় তীব্র গরমে অতিষ্ঠ ছিল নগরবাসী। এছাড়া বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গরমের সঙ্গে অস্বস্তিও বাড়ে। তারপরও লোডশেডিং সে অস্বস্তি যেন বাড়িয়ে দেয়। এ অবস্থায় সবার প্রত্যাশা ছিল বৃষ্টির।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ২টা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। রাতভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। ভোরেও একটানা বৃষ্টি হয়। সকাল ১১টা পর্যন্ত থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মে. জহিরুল ইসলাম জানান, গতকাল বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৫৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। আজকের পূর্বাভাস সম্পকে তির্নি বলেন, আকাশ আংশিক মেঘলাসহ অস্থায়ীভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। সেই সাথে অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সরেজমিন পরিদর্শন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর, দক্ষিণ কাট্টলী, চকবাজার, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়াসহ বিভিন্ন নিচু এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে যায় বৃষ্টিতে। বাকলিয়ার কে বি আমান আলী রোড ফুলতলা, বড় মিয়া মসজিদ, ডিসি রোড, নুর বেগম মসজিদ এলাকাসহ আশপাশের এলাকা পানিতে তলিয়ে ছিল। হালিশহর, ঈদগাঁহ কাঁচা রাস্তা, মনসুরাবাদ পাসর্পোট অফিসের সামনে, দক্ষিণ কাট্টলীর নাথপাড়া, জেলেপাড়া, হরিমন্দির রোড, সদু চৌধুরী রোডেও জলজটে দুর্ভোগ ছিল স্থানীয়দের।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাপাসগোলায় কোমর সমান পানি দেখা গেছে। ফুলতলায়ও একই চিত্র ছিল। চকবাজার মুহাম্মদ আলী শাহ দরগাঁহ লেইনে বাসা-বাড়িতে পানি ডুকে যায়। পাশের আবদুল হাকিম শাহ লেইনও পানিতে তলিয়ে যায় আগ্রাবাদ চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পুরাতন ভবনের নিচতলা পানিতে তলিয়ে যায়। পানির মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন রোগী ও রোগীর স্বজনরা। মোজাম্মেল নামে রোগীর এক স্বজন জানান, আমার ভাগিনা ভর্তি আছে। জরুরি কাজে আমাকে বাইরে যেতে হয়। নিচ তলার পানি ও রাস্তার পানির জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
কাপাসগোলা বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, এতদিন গরমের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ছিলাম। এখন জলাবদ্ধতার জন্য কষ্ট পাচ্ছি। রেজাউল নামে এক পথচারী বলেন, অফিসে যাচ্ছি। রাস্তা তো তলিয়ে গেছে। লোকাল গাড়িও কম ছিল। বাধ্য হয়ে রিকশা নিই। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হয়েছে।