শুল্ক কর্মকর্তা শাহজালাল উদ্দিন। স্ত্রী মেহেরুন নিসা ও একমাত্র মেয়ে ফাইরুজ কাশেম জামিরাকে নিয়ে থাকতেন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাস্টম কোয়ার্টারে।
কক্সবাজারে বাড়িতে আসার জন্য ২ দিনের ছুটি নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। বাড়ির পথে রওনা হওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তিনি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিণ কোজি কটেজ ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় যান।
আগুনে পুড়ে সেখানেই তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এতে জীবিত অবস্থায় আর ফেরা হলো না আপন নিবাস কক্সবাজারে। স্ত্রী-সন্তানসহ নিথর দেহে কক্সবাজারে ফিরলেন তিনি।
শনিবার (২ মার্চ) রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহ জালালের স্ত্রী মেহেরুন নিসার রামুর গ্রামের বাড়ি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে পৌঁছায় তাদের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স।
তাদের মরদেহ কক্সবাজার পৌঁছার পর সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি। চলে স্বজনদের করুণ আহাজারি। রামুতে রাত ১০টায় তাদের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শাহ জালালের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের হলদিয়াপালংয়ে।
কাল রবিবার সকাল ১১ টায় মরিচ্যা মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাযা হওয়ার কথা রয়েছে। জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তারা।
এদিকে, ছেলে শাহ জালালসহ আদরের নাতনি ও পূত্রবধুকে হারিয়ে বাবা আবুল কাশেম এখন অনেকটাই বাকরুদ্ধ। যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর অত্যাচার সহ্য করা এই বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন ছেলের শোকে কাতর। বাড়ির আঙিনাজুড়ে চলছে দাফনের প্রস্তুতি। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাঁচ ভাই এক বোনের মধ্যে মেঝো ছিলেন নিহত শাহ জালাল। ভাই হারানোর বেদনায় কাতর তার সহোদরেরাও। বার বার স্মৃতিচারণ করে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তারা।