রাঙ্গুনিয়ায় ২১ দিন ধরে মো. নাছের উদ্দিন (৪০) নামে এক প্রবাসী নিখোঁজ রয়েছেন। এই ঘটনায় তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামী অপহরণের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নিখোঁজ প্রবাসীর মা ছকিনা বেগম (৫৮)। মামলায় স্ত্রী ছাড়াও সম্বন্ধী ও শ্যালিকার স্বামীকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত
করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছেন।
নিখোঁজ প্রবাসী মো. নাছের উদ্দিন উপজেলার মরিয়ম নগর ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের আবুল কাশেম চৌধুরীর ছেলে। অভিযুক্তরা হলেন তার স্ত্রী শেলী আক্তার (৩৩), সম্বন্ধী আবু ছালেহ (৩৫) এবং শ্যালিকার স্বামী রাউজান নোয়াপাড়া এলাকার গনু মিয়ার ছেলে আবদুল জব্বার (৩৫)।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী এম জাফর আলম বলেন, প্রবাসীর মা ছখিনা বেগম তার পুত্র নিখোঁজের ব্যাপারে চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অপহরণ মামলাটি দায়ের করেন। আদালত শুনানি করে রাঙ্গুনিয়া থানাকে দুইদিনের মধ্যে মামলাটি গ্রহণ এবং পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি দেশে আসা প্রবাসী নাছের গত ৮ নভেম্বর দুপুরে মরিয়মনগর ফুলগাজি পাড়া তার নতুন বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, শ্যালিকার স্বামী আবদুল জব্বারের কাছ থেকে নাছেরের আড়াই লাখ টাকা পাওনা ছিল। টাকা চাইলে তার সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত ৮ নভেম্বর নাছেরকে পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে মুঠোফোনে রাউজানের নোয়াপাড়া যেতে বললে ওইদিন দুপুরে ঘর থেকে বের হয়েছিল। এরপর থেকে তার আর খোঁজ মেলেনি বলে জানান স্বাজনরা। মামলার বিবাদীরা প্রবাসী নাছেরকে খুনের উদ্দেশ্যে গুম করে রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
নিখোঁজ প্রবাসীর ভাই মো. মনছুর আলী বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে স্ত্রীর মনোমালিন্য চলছিল। এমনকি তার স্ত্রী একবার তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেছিল। পরে সামাজিকভাবে বৈঠক করে এর সুরাহা করা হয়। আমরা ধরণা করছি ভাইকে তার স্ত্রী ও সম্বন্ধী এবং বোন জামাইরা মিলে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করেছে।
তবে এই ব্যাপারে তার স্ত্রী শেলি আকতার বলেন, স্বামী নিখোঁজ হওয়ায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমার সংসার ভাঙার জন্য মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাকে নিরাপদ ও অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই আমি।
এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) খাঁন নুরুল ইসলাম বলেন, আদালত থেকে নির্দেশনা পেয়েই অপহরণ মামলাটিকে এফআইর হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। থানায় নিখোঁজ ডায়েরির পর থেকেই আমরা প্রবাসী নাছেরকে উদ্ধারে সচেষ্ট রয়েছি।