বিমানের দরজা খুলে গেল। হাসিমুখে দরজার সামনে এসে দাঁড়ালেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। নামার আগে পাশের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। কিন্তু আচমকাই বিমানের দরজার আড়াল থেকে লাল পোশাক পরিহিত হাত ধেয়ে এল তার মুখ লক্ষ্য করে। আকস্মিক এই কাণ্ডে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান ম্যাক্রোঁ। পরমুহূর্তে স্ত্রীর সঙ্গে নেমে আসেন বিমান থেকে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, প্রেসিডেন্ট–পত্নীর পরনে তখন ছিল লাল পোশাক। কয়েক সেকেন্ডের এই ভিডিও ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। চলছে হাসিঠাট্টাও। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি স্ত্রীর হাতে থাপ্পড় খেলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট?
রোববার থেকে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া সফর শুরু করেছেন ম্যাক্রোঁ। সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ। সন্ধ্যায় তার বিমান ভিয়েতনামের হ্যানয়ে অবতরণ করার পরের মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হতেই শোরগোল পড়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া সফর নিয়ে এখন যত না আলোচনা, তার থেকেও বেশি স্পটলাইট কাড়ল ম্যাক্রোঁর এই ভিডিওটি।
ওই ভিডিওর শেষে দেখা যায়, ম্যাক্রোঁ হতভম্ব ভাব কাটিয়ে নেমে আসেন বিমান থেকে। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রীও। তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেই হাত ধরতে চাননি ব্রিজিত। তবে কি দম্পতির মধ্যে ‘ঝগড়া’ চলছে?
কী বলছে এলিসি প্রাসাদ : গতকাল সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় এলিসি প্রাসাদ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে ম্যাক্রোঁকে উড়োজাহাজে স্ত্রীর চড় দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরাসরি নাকচ না করে ওই ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন সংশ্লিষ্ট ফরাসি কর্মকর্তারা। ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা ফ্রান্সে সিএনএনের সহযোগী টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে বলেন, এই দম্পতির মধ্যে তখন হালকা কথাকাটাকাটি হচ্ছিল। এলিসি প্রাসাদের একটি সূত্র এই ঘটনাকে ‘ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সূত্রটি সিএনএনকে বলেছে, সফর শুরুর আগে প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী আরাম করে সময় কাটাচ্ছিলেন এবং মজার ছলে একে অপরের সঙ্গে ঠাট্টা মশকরা করছিলেন। সূত্রটি আরও বলেছে, ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের গুজব ছড়াতে এর চেয়ে বেশি কিছু দরকার ছিল না। তিনি অভিযোগ করেন, রাশিয়ার পক্ষে যারা অনলাইনে অপপ্রচার চালায়, তারা খুব দ্রুত ঘটনাটিকে বিকৃত করে বিতর্ক তৈরি করেছে।
তবে ফরাসি সংবাদমাধ্যমগুলি দাবি করে, ওই ভিডিওটি ভুয়া নয়, আসল। ম্যাক্রোঁর এক ঘনিষ্ঠ ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘বিএফএমটিভি’কে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া শুরুর আগে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে ‘ঝগড়া’ হয়েছিল। তবে তা ছিল নিতান্তই ‘দাম্পত্যকলহ’। তার জেরেই হ্যানয় বিমানবন্দরে ওই কাণ্ড ঘটে বলে দাবি তার।