চকবাজারের ব্যবসায়ী লুৎফুর কবির। আন্দরকিল্লা থেকে ব্যাংকের কাজ শেষ করে ফিরছিলেন। চেরাগী-জামালখান মোড় হয়ে হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের সামনে এসেই পড়লেন জ্যামে। কিছুতেই সামনে এগোতে পারছিলেন না। একটু একটু করে কোনো রকমে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা। একপর্যায়ে গন্তব্যে গেলেনও বটে। তবে ২৫ মিনিট সময় অপচয় করেই। লুৎফুর কবির জানান, মহসিন কলেজ থেকে গুলজার মোড় যেতেই তার ১৫ মিনিট সময় লেগে যায়। নগরীর স্কুল-কলেজ সংলগ্ন সড়কে লুৎফুর কবিরের মতো অনেকেই গতকাল সোমবার যানজটের সম্মুখীন হয়েছেন।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার সরকারি নির্দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সচল হয়। এতেই সড়কে নেমে আসে চিরচেনা যানজট। ভোগান্তির শিকার হতে হয় নানা বয়সী, নানা পেশার পথচারীকে। ভোগান্তি থেকে বাদ পড়েনি শিক্ষার্থীরাও। প্রথম দিনের সরেজমিনেও অনেক এলাকায় যানজট দেখা গেছে। তবে গতকালের (দ্বিতীয় দিন) মতো তীব্র ছিল না। গতকাল সোমবার তীব্র যানজটে পড়া এলাকাগুলোর মধ্যে বাওয়া স্কুল, নাসিরাবাদ সরকারি স্কুল, ওমেন কলেজ মোড়, ও আর নিজাম রোড, আগ্রাবাদ মোড়, আগ্রাবাদ মোড় থেকে টাইগারপাস মোড়, নিউ মার্কেট মোড়, কোতোয়ালি মোড়, সিরাজউদ্দৌলা রোড়, বহদ্দারহাট থেকে মুরাদপুর, মুরাদপুর থেকে দুই নম্বর গেইট, দুই নম্বর গেইট থেকে নাসিরাবাদ স্কুল, প্রবর্তক মোড় থেকে গুলজার মোড়, গুলজার মোড় থেকে কলেজ রোড ও জামালখান মোড় থেকে কাজীর দেউরী ছিল উল্লেখযোগ্য।
বাওয়া স্কুল থেকে ওয়াসা মোড় পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, পাবলিক বাস থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত গাড়িগুলো সামনে এগুতেই পারছে না। দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পথচারীরা বলছেন, স্কুল-কলেজ খুলছে তা জানার পরও ট্রাফিক কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। ব্যবস্থা নিলে এমন অবস্থা সৃষ্টি হতো না। আমেনা বেগম নামের একজন শিক্ষার্থীর মা বলেন, এমনিতে তীব্র গরমে নাখাল অবস্থা, তার মধ্যে সড়কে গাড়িগুলো ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। নড়াছড়া পর্যন্ত করছে না। কখন বাসায় পৌঁছাবো, কখন রান্না করব, কখন খাব তার কিছুই জানি না। ট্রাফিক পুলিশের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুল কলেজ খোলায় সড়কে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। নিয়ন্ত্রণে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। তবে সেভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে স্কুল কলেজ ছুটির সময় যানজটের তীব্রতা বেড়ে যায়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।