সৌদি আরবকে বিশ্বকাপের আয়োজক করায় সমালোচনার মুখে ফিফা

স্পোর্টস ডেস্ক | শুক্রবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ

এশিয়াতে সর্ব প্রথম বিশ্বকাপ হয়েছিল ২০০২ সালে জাপানকোরিয়ায়। দ্বিতীয়বার আয়োজক ছিল ২০২২ সালে কাতার। সৌদি আরব হতে যাচ্ছে এশিয়ার চতুর্থ দেশ, যারা আয়োজন করতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ফুটবল প্রতিযোগিতা। প্রথমবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। গত বুধবার ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে তাদের নাম ঘোষণা করেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। তবে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পেশাদার ফুটবলারদের ইউনিয়ন। তারা জানায়, এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে মানবাধিকার ঝুঁকির বিষয়টি উল্লেখযোগ্যভাবে জড়িত রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই ঝুঁকি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ফিফার সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা। পেশাদার ফুটবলারদের নিয়ে গঠিত ইউনিয়নের সহপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বেয়াউ বুশ বলেন এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে যুক্ত গুরুতর মানবাধিকার ঝুঁকিগুলো সুস্পষ্টভাবে নথিভুক্ত। বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ইভেন্টের আয়োজনের অধিকার অর্জনের মাধ্যমে, সৌদি আরব এবং ফিফাকে নিশ্চিত করতে হবে যে ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপে সকলের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। তবে ফিফার চলমান প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং মানবাধিকার রক্ষায় তাদের জবাবদিহিতার অভাব কোনোভাবেই আশ্বস্ত করে না যে, এই ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। পেশাদার ফুটবলারদের ইউনিয়নের প্রতিবাদের বিপরীতে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সৌদি সরকার ও ফিফা। এর আগে অনেকবারই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে সৌদি আরব। আইনের মাধ্যমেই নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে তারা।

গত বছরই ফিফা জানায়, ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজকস্বত্ব দেওয়া হবে এশিয়া কিংবা ওশেনিয়া মহাদেশের কোনো দেশকে। এই লড়াইয়ে সৌদি আরবের বিপক্ষে যৌথভাবে দাঁড়ানোর চিন্তা করেছিল অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। পরে অবশ্য আর আনুষ্ঠানিকভাবে বিড করেনি তারা। তাই এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনও (এএফসি) এককভাবে সৌদি আরবকে সমর্থন করে। গত বুধবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবের নাম ঘোষণার পর একপ্রকার তোপের মুখেই পড়ে ফিফা। তাদের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে অভিবাসী শ্রমিকদের সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন, এলজিবিটি অধিকারকর্মীরাসহ বিভিন্ন সংস্থা। এর আগে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কাতারকে নিয়েও সমালোচনা করেছিল অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। এক ভিডিওতে তারা তুলে ধরেছেন কাতারে মানবাধিকার ও সমলৈঙ্গিক সম্পর্কের পরিস্থিতি। এক যুগ পর আবারও মধ্যপ্রাচ্যে বসতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের আসর। বিশ্বকাপের আগে সৌদি আরব আয়োজন করবে এএফসি এশিয়ান কাপ। ২০২৭ সালে হতে যাওয়া এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন হবে সৌদির জন্য বিশাল এক অভিজ্ঞতা। ২০২৭ এশিয়ান কাপ আয়োজন হবে সৌদি আরবের ফিফা বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এশিয়া কাপ দেশটির বিশাল অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সহায়তা করবে। অবকাঠামোসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ এবং নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সক্ষমতার পরীক্ষা হয়ে যাবে বিশ্বকাপের আগে। তেমনটি বলেছেন এএফসি প্রেসিডেন্ট। এদিকে শেখ সালমান সৌদির ওপর এএফসির পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে বলেছেন ফিফা বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করতে এএফসি সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশন এবং ফিফার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চারপাশের ফুটবল ভক্তদের জন্য একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা তৈরি করবো। এই ঐতিহাসিক অর্জন এশিয়ান ফুটবলের জন্য একটি নতুন অধ্যায় চিহ্নিত করেছে। সৌদি আরব ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার মাধ্যমে এশিয়া বিশ্ব মঞ্চে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। সৌদি আরব ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য ১৫টি স্টেডিয়াম প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে বিদ্যমান চারটি ভেন্যু সংস্কার করা ছাড়াও ১১টি নতুন বিশ্বমানের অ্যারেনা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে এশিয়ার অন্যতম এই ধনাঢ্য দেশটির।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসর্বকনিষ্ঠ দাবাড়ু হিসেবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতের গুকেশ
পরবর্তী নিবন্ধএবার নারীদের বিসিএল আয়োজন করবে বিসিবি