মহেশখালীর প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা সোনাদিয়া দ্বীপের সুরক্ষায় দ্বীপে সৃষ্ট ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট তথা প্যারাবন নিধন বন্ধ ও সকল অবৈধ চিংড়িঘের উচ্ছেদের পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে হাইকোর্টে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। মহেশখালীর বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রহিম উল্লাহ, মহেশখালী উপজেলার সদ্য সাবেক হওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদিন, মহেশখালী প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক এম আজিজ সিকদার, মো. ইউনুস, সিরাজুল মোস্তফা রুবেল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন ছাত্রসহ মোট ১২ জন মহেশখালীর বাসিন্দার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন গত ৩ সেপ্টেম্বর সোনাদিয়া আর প্যারাবন নিধন বন্ধে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা দায়ের করেন। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ গতকাল বুধবার এই বিষয়ে আদেশ দেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেজা, পরিবেশ ও বন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর, জেলা প্রশাসক কঙবাজার এবং পুলিশ সুপার কঙবাজারসহ ১২ জনকে এই বিষয়ে আশু ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত সকল অবৈধ চিংড়িঘের উচ্ছেদের পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে মহেশখালীর সদ্য সাবেক হওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপ ও আশপাশের এলাকায় রয়েছে বিস্তৃত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। ১৯৯৯ সালে সরকার সোনাদিয়া দ্বীপকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করে। সম্প্রতি স্থানীয় কিছু চিহ্নিত ভূমিদস্যু কর্তৃক সোনাদিয়া দ্বীপ ও এর আশপাশের এলাকা ঘটিভাংগা, তাজিয়াকাটা ও হামিদারদিয়ার ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট নিধন করে অবৈধভাবে চিংড়ি ঘের তৈরি করে আসছিল। এ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন দৈনিকে রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাই সোনা দিয়ে দ্বীপের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট নিধন বন্ধ, অবৈধ চিংড়িঘের উচ্ছেদ করে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত হাইকোর্ট ভ্যাকেশন (বন্ধ) থাকায় শুনানি করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ আজ (২৩ অক্টোবর) শুনানি শেষে আদালত এই নির্দেশ দেন। রিট আবেদনটি শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।