এবারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। টানা চার ম্যাচে জিতে সবার আগে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার পথে ছিল কিউইরা। কিন্তু এর পরই ঘটে ছন্দ পতন। হারে পরের টানা চার ম্যাচে। তাই লিগ পর্বের শেষ ম্যাচটি হয়ে উঠে তাদের জন্য এক রকম কোয়ার্টার ফাইনাল। কারণ এরই মধ্যে চার ম্যাচে জিতে সেমির দৌড়ে রয়েছে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। তাই শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচটি শুধু জিতলেই হবে না সাথে রান রেটও বাড়াতে হবে। তেমন ছিল নিউজিল্যান্ডের মিশন। সে মিশনে অনেকটাই সফল কিউইরা। শ্রীলংকাকে কম রানে অল আউট করার পাশাপাশি কম ওভারে সে রান টপকে গিয়ে জয়ের পাশাপাশি নিজেদের রান রেটও বাড়িয়ে নিয়েছে কিউইরা। গতকাল শ্রীলংকাকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
লংকানদের দেওয়া ১৭২ রানের টার্গেট কিউইরা টপকে গেছে ১৬০ বল হাতে রেখে। আর তাতে ৯ ম্যাচের পাঁচটিতে জয়ের ফলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াল ১০। আর রান রেট দাঁড়িয়েছে ০.৭৪৩। এখন পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানকে স্ব স্ব ম্যাচে কেবল জিতলেই হবে না, এই রান রেটকেও পেছনে ফেলতে হবে। তবে সে কাজটা তাদের জন্য বেশ কঠিনই হবে। কারণ এই দুই দলের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই এখন দেখার বিষয় এসব হিসেব নিকেষ শেষ করে শেষ দল হিসেবে কারা জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে।
গতকাল ব্যাঙ্গালুরুর চিন্বাস্বামী স্টেডিয়ামে বল হাতে দুর্দান্ত করে কিউই বোলাররা। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা শ্রীলংকাকে প্রথম আঘাত হানেন টিম সাউদি। ৩ রানের মাথায় নিশাংকাকে ফেরান এই পেসার। এরপর আরেক ওপেনার কুশল পেরেরা একপ্রান্ত ধরে রাখলেও অপর প্রান্তে ট্রেন্ট বোল্টের তোপের মুখে কেবলই আসা যাওয়া করছিল অন্যরা। ফলে কুশল মেন্ডিস, সামারাবিক্রমা, আশালাংকা ফিরেন দুই অংকের ঘরে যাওয়ার আগেই। ৭০ রানে যখন ৫ উইকেট হারায় শ্রীলংকা তখন কুশল পেরেরার নামের পাশে ২৮ বলে ৫১ রান। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলংকা। অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ২৭ বলে ১৬ আর ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২৪ বলে করেন ১৯ রান। ১২৮ রানে ৯ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দশম উইকেটে মাহিশ থিকসানা আর দিলশান মাদুশঙ্কা কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। না হলে লঙ্কানদের রান আরও কম হতো। শেষ উইকেট জুটিতে তারা ৮৭ বল খেলে ৪৩ রান যোগ করেন এ দুজন। মাদুশঙ্কা ৪৮ বল খেলে ১৯ রান করে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন। ৯১ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন থিকসানা। আর তাতেই লংকানদের ইনিংস গিয়ে দাঁড়ায় ১৭১ রানে। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ট্রেন্ট নিয়েছেন ৩টি উইকেট। আর ২টি করে উইকেট নিয়েছেন লুকি ফার্গুসন, মিচেল স্যান্টনার এবং রাচিন রবীন্দ্র।
১৭২ রানের সহজ টার্গেট। এই টার্গেটকে কতটা দ্রুত টপকানো যায় সে লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিল নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা। দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র ১২.২ ওভারেই তুলে নেন ৮৬ রান। ৪২ বলে ৪৫ রান করা কনওয়েকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন সামিরা। পরের ওভারে ফিরেন রাচিন রবীন্দ্রও। ৩৪ বলে ৪২ রান করেন তিনি। মেরেছেন ৩টি চার এবং ৩টি ছক্কা। কেন উইলিয়ামসন অবশ্য বেশিদূর এগুতে পারেননি। ম্যাথিউসের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে করেছেন ১৫ বলে ১৪ রান। তবে ড্যারেল মিচেল টেনে নিয়ে গেছেন দলকে দ্রুত গতিতে। যদিও ম্যাথিউসের দ্বিতীয় শিকার হয়ে তিনি ফিরেছেন ৩১ বলে ৪৩ রান করে। ফিলিপসের ১০ বলে ১৭ রানের সুবাধে ১৬০ বল এবং ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে নিউজিল্যান্ড। আর এর ফলে রান রেটে অনেকটা এগিয়ে গিয়ে সেমিফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখল কিউইরা। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট।