বৈরী আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এসব ঘরবাড়ির লোকজন। দ্বীপের একটি স্লুইচ গেট বন্ধ রাখার কারণে এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ দ্বীপের বাসিন্দাদের।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়জুল ইসলাম জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত দুদিন ধরে টেকনাফ–সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিতে দ্বীপের পাঁচ গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ির লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মূলত স্থানীয় এক ব্যক্তি পানি চলাচলের স্লুইচ গেট বন্ধ করে দেওয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ ছাড়া জোয়ারের আঘাতে ঘাটে থাকা একটি মাছ ধরা ট্রলারও ডুবে গেছে।
দ্বীপের বাসিন্দারা বলছেন, বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। যার কারণে দ্বীপের পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মাঝেরপাড়া, নজরুলপাড়া ও কোনাপাড়া পানিতে ডুবে গেছে। এখানকার দুই শতাধিক ঘরবাড়ির লোকজন পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। মূলত সম্প্রতি সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন বিএনপির সহ–সভাপতি আবুল কালাম বহু বছরের পুরোনো এসব এলাকার পানি চলাচলের একমাত্র স্লুইচ গেট বন্ধ করে দেন। ফলে টানা বৃষ্টিতে পানি জমে আছে। মানুষজন পানিবন্দি অবস্থায় আছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আল নোমান বলেন, টানা বৃষ্টিতে পানি জমায় আমার এলাকার দেড় শতাধিক ঘরবাড়ির লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে তাদের কষ্ট বেড়েছে। এখনও বৃষ্টি হচ্ছে। স্লুইচ গেট বন্ধ থাকায় পানি যেতে পারছে না। সবগুলো এলাকায় পানি জমে আছে। স্লুইচ গেট খোলার কথা বারবার বলা হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির সহ–সভাপতি আবুল কালাম বলেন, আমি ওই স্লুইচ গেট বন্ধ করিনি। তবে আমার বাড়ির পাশের খলিল নামের এক ব্যক্তি বাড়ির সীমানা ঠিক করতে গিয়ে স্লুইচ গেটটি বন্ধ করেছেন। এজন্য পানি যাচ্ছে না। আমরা সবাই মিলে স্লুইচ গেট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেছি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, টানা বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের কয়েকশ ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মূলত একটি স্লুইচ গেট বন্ধ থাকায় এ ধরনের সমস্যা হয়েছে। পানি চলাচলের জন্য ওই স্লুইচ গেট খুলে দিতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি থামলে আশা করছি, পানিও নেমে যাবে। এরপরও আমরা পানিবন্দি পরিবারগুলোর খোঁজখবর রাখছি। পাশাপাশি সমুদ্র উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রয়েছে টেকনাফ–সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল।