বঙ্গোপসাগর থেকে বড় মাছ ধরার জন্য বেশ পরিচিতি আছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা আবদুল গণির। কয়েক বছর ধরে তার ট্রলারের জালে বড় বড় লাক্ষা, কোরাল ও পোপা মাছ ধরা পড়েছে। এবার ধরা পড়েছে প্রায় ৩৩ কেজি ওজনের বড় একটি ‘কালো পোপা’। মাছটির দাম হাঁকা হয়েছে সাড়ে সাত লাখ টাকা।
জেলে আবদুল গণি জানান, গতকাল শনিবার ভোরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে ছেঁড়াদিয়ার পশ্চিম সাগরে তার মালিকানাধীন একটি ট্রলার থেকে জাল ফেলা হয়। সকাল ৮টার দিকে জালে আটকা পড়ে বড় একটি কালো পোপা মাছ। পরে মাছটি কাঁধে তুলে সেন্টমার্টিন বাজারের ফিশারিতে মেপে ওজন দেখা গেছে ৩২ কেজি ৮০০ গ্রাম। গতকাল দুপুর থেকে থেকে কালো পোপা মাছটি কাঁধে নিয়ে আবদুল গণি বাজারে যাচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে হইচই পড়ে যায়। খবর পেয়ে মাছটি কেনার জন্য অনেকে ভিড় করছেন। দাম হাঁকা হচ্ছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা। একজন ব্যবসায়ী ৬ লাখ টাকায় কিনতে চেয়েছেন। কিন্তু গতকাল রাত ৮টার পর্যন্ত মাছটির বিক্রি করা হয়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরে জেলে আবদুল গণির ট্রলারের জালে বড় বড় লাক্ষা, কোরাল ও পোপা মাছ ধরা পড়েছে। এর ধারাবাহিকতায় এবার ধরা পড়েছে প্রায় ৩৩ কেজি ওজনের বড় একটি কালো পোপা।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের মৎস্য ব্যবসায়ী জমির উদ্দিন বলেন, বায়ুথলির কারণেই পোপা মাছের দাম বেশি। একেকটি বায়ুথলির দাম ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। এসব দিয়ে দামি ওষুধ ও মূল্যবান সার্জিক্যাল সুতা তৈরি হয়। তবে মাছটি কেটে বিক্রি করলে প্রতি কেজিতে পাওয়া যায় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, পোপা মাছের বায়ুথলি দিয়ে থাইল্যান্ড, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি হয়। তাই পোপা মাছের দাম বেশি। মাছের পেট কেটে বায়ুথলি বের করে রোদে শুকানো হয়। তারপর বিদেশে রপ্তানি করা হয়। কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটায় পোপা মাছের বায়ুথলি রপ্তানির কয়েকটি কারখানা আছে।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর আবদুল গণির জালে ধরা পড়েছিল ৩৪ কেজি ওজনের আরেকটি বড় পোপা মাছ। মাছটি বিক্রি করেছিলেন ৮ লাখ টাকায়। ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ১২টি লাল ও কালো পোপা ধরা পড়েছিল গণির জালে। সব কটির ওজন ছিল ৩০ থেকে ৪০ কেজির মধ্যে।












