কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের ওপর শকুনের নজর পড়েছে বলে মন্তব্য করেছে কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে চলাচলকারী পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াভ)। গতকাল বুধবার দুপুরে কঙবাজার সাগরপাড়ের একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা সেন্টমার্টিনে পর্যটক চলাচল সীমিত করার বিরোধিতা করে এমন মন্তব্য করেন। জাহাজ মালিকরা সেন্টমার্টিনে দৈনিক ৩ হাজার পর্যটক যাতায়াতের সুযোগ রাখার নিশ্চয়তা চান।
সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি ৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ৭০ মিটার গভীর পর্যন্ত সমুদ্রের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিমি এলাকাকে মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া (এমপিএ) ঘোষণা করা হয়। এমপিএ বাস্তবায়নের জন্য গত ৩০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১৩ দফা সুপারিশ করা হয়।
যার মধ্যে এ দ্বীপে পর্যটক চলাচল ও যাত্রীযাপন সীমিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
১৯৯৫ সালের পরিবেশ আইনে সরকার ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করে। তবে সেন্টমার্টিন জলপথে চলাচলকারী জাহাজ মালিকরা এ দ্বীপে পর্যটক চলাচল সীমিত করার বিরোধিতা করে করে বলছেন, সরকার যদি এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে তা হবে কঙবাজারের পর্যটন শিল্পের জন্য আত্মঘাতি। মাত্র ২টি জাহাজ রেখে বাকি জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়ার প্রচেষ্টা তারা মেনে নেবে না।
স্কোয়াভ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কঙবাজারের এক তৃতীয়াংশ পর্যটক আসেন সেন্টমার্টিনের আকর্ষণে। পর্যটনকে কেন্দ্র করে এ দ্বীপে ১৮৮টি আবাসিক হোটেল ছাড়াও শতাধিক রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। এছাড়া কঙবাজারসহ দেশের বিভিন্নস্থানে শতাধিক ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান, জাহাজ ছাড়াও নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এ দ্বীপের সৌন্দর্যকে ঘিরে। দ্রুত বর্ধনশীল এই সেক্টরকে গলাটিপে ধরলে এ খাতে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে। কর্মহারা হবে হাজারো মানুষ। সেন্টমার্টিনে ১০টি জাহাজে দৈনিক অন্তত ৩ হাজার পর্যটকের যাতায়াতের সুযোগ রাখার দাবি জানান জাহাজ মালিকরা।
সংবাদ সম্মেলনে স্কোয়াভ সভাপতি তোফায়েল আহমদ, কেয়ারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক নুর মোহাম্মদ ছিদ্দিকি, টুয়াকের কর্মকর্তা এসএ কাজলসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।