সেদিন ভেসে যাওয়া স্বজনদের স্মৃতি এখনো কাঁদায়

বাঁশখালী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৯ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের অন্যান্য অঞ্চলের মত বাঁশখালীর জনগণও ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল তাদের অনেক স্বজনকে হারিয়েছে। সেদিন এই উপজেলার ৩০ হাজারের বেশি মানুষ ভেসে গিয়েছিল বন্যায়। সেদিনের স্বজন হারানোর সেই স্মৃতি এখনো এই অঞ্চলের মানুষকে কাঁদায়। এদের একজন বাঁশখালীর উপকূলীয় বাহারছড়া রত্নপুর এলাকার মো. জালাল উদ্দিন চৌধুরী। ঘূর্ণিঝড়ে তিনি তার মা, ভাই-বোনসহ ৬ জনকে হারিয়েছেন। তিনি নিজেই মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন গাছের ডাল আঁকড়ে ধরে। জালাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, বেড়িবাঁধের পাশে আমার বাড়ি। বাড়িতে বাবা মা ভাই বোন নানীসহ অনেকে ছিলাম। সেদিন সন্ধ্যা হতে বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে পানিতে আমাদের পরিবারের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এসময় আমার মা খতিজা বেগম (৪০), নানি কুলছুমা খাতুন (৫৯), বোন শাহনাজ আক্তার (২ বছর ৫ মাস বয়সী), ভাই জলিল (৪ বছর ৫ মাস বয়সী), মামাতো বোন জিশু আক্তার (৫) এবং খালাত ভাই রায়হান (৮) পানির তোড়ে ভেসে গিয়েছিল। পরে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমি একটি গাছের ডালে আঁকড়ে ধরেছিলাম। পরে পাড়া প্রতিবেশী ও ভাইয়েরা আমাকে উদ্ধার করেছে। আমার বারা মফজল আহমদ চৌধুরীকে ঘুর্ণিঝড়ের ৩ দিন পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন কাথরিয়া এলাকা থেকে পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে আমি রাউজান গশ্চি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি। নিজেকে উপকূলীয় বনায়ন ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত রেখেছি। সেদিন যদি শক্ত বেড়িবাঁধ ও ম্যানগ্রোভ বন থাকত তাহলে উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে জীবন দিতে হত না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধওটির ড্রেস পরে নাচলেন ঢামেকের তিন চিকিৎসক
পরবর্তী নিবন্ধ৩০ বছরেও কাটানো যায়নি যেই ক্ষতি