একটি সেতুর অভাবে সুয়াবিল–সুন্দরপুর ও পৌরসভার দূরত্ব বেড়ে যায় ১৫–২০ কিলোমিটার। সামান্য দূরত্ব হলেও যেন বিরাট এক ব্যবধান সুয়াবিল আর সুন্দরপুরের। কৃষকরা পান না উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম। পিছিয়ে আছে জীবন যাত্রা। শুষ্ক মৌসুমে অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো ও বর্ষায় দড়ি টানা নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে আসা–যাওয়া করতে হতো চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির পাঁচ পুকুরিয়া ও পূর্ব সুয়াবিল গ্রামের হাজারো বাসিন্দাদের। এতে প্রায়ই ঘটতো ছোট–বড় দুর্ঘটনা। তবুও নিরুপায় হয়ে হালদা নদী পার হতে হতো সুয়াবিল ইউনিয়নের সিদ্ধাশ্রম, সুন্দরপুরের পাঁচপুকুরিয়া, ফটিকছড়ি, নাজিরহাট পৌরসভার অর্ধ–লক্ষাধিক মানুষের। দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো হালদায় একটি সেতু নির্মাণ। অবশেষে জনসাধারণের এসব সমস্যা লাঘবের জন্য ফটিকছড়ির পাঁচপুকুরিয়া সড়কের চেইনেজ হালদা নদীর উপর ২৪০ মিটারের মিটার ব্রিজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে এলজিইডি। আর এতে হালদা নদীর দু’পারের চিত্র পাল্টে যাবে বলে মতামত সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির পক্ষে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির রাহমান সানির সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন্নাহার মুক্তা, উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথসহ অন্যান্যরা।
ব্রিজের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করবে এলজিইডি। আনুমানিক ২ মাস পর কাজ শুরু হতে পারে। এ ব্রিজের মাধ্যমে সুয়াবিল এবং পৌরসভার একাংশের সাথে ফটিকছড়ির লিংক রোড হবে। সেতুর সাথে নির্মিত হবে প্রায় ১ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। সেতু নির্মাণ হলে এতে দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগে দূরত্ব কমবে ১৫–২০ কিলোমিটার। কৃষি পণ্য সহজে আনা–নেওয়া যাবে এবং মানুষের জীবনমান সহজ হবে।
হালদার পাড়ের সুয়াবিলে অংশে নানা প্রজাতির সবজি এবং মৌসুমি সবজি হয় ভাল। মৌসুমী সবজি ব্যবসায়ী মো. সোহেল বলেন, আমরা একটা ব্রিজের অভাবে সবজি বাজারে নেওয়ার জন্য ১০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। সবজি নিতে গুনতে হয় প্রতি গাড়িতে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা। যদি ব্রিজটি হলে ভাড়া হবে তখন ১২০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, হালদা নদীর পাড়ে উৎপাদিত বেশ ভালো শীতকালীন সবজিসহ নানা কৃষি পণ্য উৎপাদিত হয়। ব্রিজ না থাকায় কৃষকের কষ্টে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে ব্যয় বেড়ে যেতো। যার ফলে কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পেতো না। সেতুটি নির্মাণ হলে কৃষকরা অনেক বেশি উপকৃত হবেন।