সেঞ্চুরিটা কি তাহলে ফেলেই দিয়ে আসলেন লিটন !

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন, ২০২৫ at ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ

গল টেস্ট খেলতে নামার আগে শান্ত আর মুশফিকের মত চাপে ছিলেন লিটন দাশও। কিন্তু মাঠে নেমে সেঅই চাপকে উড়িয়ে দিলেন ব্যাটের আঘাতে। দুর্দান্ত খেলেছেন ম্যাচের দ্বিতীয় দিন। কিন্তু হতাশা নিয়ে ফিরতে হয়েছে লিটনকে। কারণ সেঞ্চুরির কাছে গিয়েই যে ফিরতে হলো তাকে। বলা যায় সেঞ্চুরিটা যেন নিজেই ফেলে দিয়ে এসেছেন লিটন। না হয় মাত্র ১৪ রানে জীবন পাওয়ার পর টেস্ট ক্রিকেটে ৯০ এর ঘরে গিয়ে কেন এমন রিভার্স সুইপ করবেন। দিনের খেলা যখন প্রায় শেষের পথে, সেই পরিস্থিতিতে লিটন দাস কেন এমন শট খেলতে গেলেন ? লঙ্কান স্পিনার থারিন্ডু রত্নায়াকের বলে এমন ভুল এক শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এলেন লিটন। সেই সঙ্গে হাতছাড়া করলেন নিজের সেঞ্চুরিও। এ আউটের জন্য কাউকে দায়ী করতে পারবেন না লিটন। ভাগ্য বিড়ম্বনাও বলা যাবে না। কারণ ভাগ্যই তাকে এতদূর আসতে সহায়তা করেছিল। না হয় ১৪ রানের সাজঘরে ফিরে যেতে পারতেন লিটন। উইকেটে এসে শুরুতেই তাড়াহুড়ো করে প্রায় বিপদ ডেকে এনেছিলেন লিটন। থারিন্ডু রত্নানায়েকে ক্রস ব্যাটে মারতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে নিশাঙ্কার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। ডান দিকে শরীর ছুড়ে সে বল তালুতে নিয়েও ফেলে দেন নিশাঙ্কা। ১৪ রানে জীবন পান লিটন।

তারপরও যে খুব স্বস্তি নিয়ে স্বচ্ছন্দে খেলেছেন তা নয়। একই বোলারের বলে ওই ওভারে অফস্টাম্পের বল ছুড়ে আউট হতে বসেছিলেন লিটন। তারপর আবার একই বোলারকে স্লিপের পাশ দিয়ে গলাতে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন। এক সময় মনে হলো সেট হয়ে গেছেন। শতরান না করে ফিরবেন না। কিন্তু ৯০এর ঘরে গিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার বদলে বলগাহীন হয়ে ওঠার চরম মূল্য দিলেন লিটন। শতরান থেকে ১০ রান দূরে দাঁড়িয়ে আত্মঘাতী রিভার্স সুইপে ঘটলো সর্বনাশ। মনে হচ্ছিল, এক যুগ আগের গল টেস্টের সঙ্গে অনেক কিছুই মিলে যাচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হলো না। প্রথম অমিল হলো, মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি মিস। অনেক বেশি ধৈর্য নিয়ে খেলেও ১৬৩ রানে ফিরে যেতে হলো মুশফিককে। মোহাম্মদ আশরাফুলের মতো ১৯০ রানরে বড় ইনিংস খেলার পথে ছিলেন শান্ত। সেটাও হলো না। দেড়শোর দুয়ারে এসে ১৪৮ রানে ফিরলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আর শেষমেষ নাসির হোসেনের মত সেঞ্চুরিয়ান হতে পারলেন না লিটন দাস। টেস্ট ক্রিকেট হলো ক্রিকেটের কুলীন জগত। সময়ের প্রবাহে সেখানে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে বটে। তারপরও এখানে অনেক বড় বড় ব্যাটারও কিছু কিছু সময় নিজের মতো না খেলে ব্যাকরণ মানেন। বলের মেধা ও গুণ বিচার করে খেলেন। ধৈর্য, মনোযোগ ও মনোসংযোগে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। লিটন দাস গতকাল যেন ওসবের তোয়াক্কা করলেন না। অবশ্য তিনি বেশিরভাগ সময় ক্রিকেট ব্যাকরণের ধার খুব ধারেনও না। নিজের মতই চলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই নিজের মতো চলা অনেক সময় নিজের অর্জনকেই আটকে দেয়। মুশফিকের মত পরিপাটি টেকনিক আর সঠিক বেসিকের অধিকারী পূর্বসূরীকে অনুসরণ না করে লিটন নিজের মতো খেলতে গিয়েই মিস করে বসলেন সেঞ্চুরি। হতাশার আগুনে নিশ্চয়ই তিনি নিজেই পুড়ছেন বেশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশান্ত-মুশফিক জুটিতে হলো না আরেকটি রেকর্ড
পরবর্তী নিবন্ধগিলক্রিস্টকে ছাড়িয়ে মুশফিকের রেকর্ড