চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের লাশঘরটি তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে (ওসেক) মরদেহ রাখার যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। তাই আলাদাভাবে লাশঘরটি রাখার প্রয়োজনীয়তা নেই। তাছাড়া ওই লাশঘরটি বর্তমানে অপরাধের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। এসব কারণেই লাশঘরটি তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।
হাসপাতাল পরিচালক বলেন, হাসপাতালে নতুন চালুকৃত ওসেক-এ মরদেহ রাখার জায়গা রয়েছে। মেডিকেল কলেজের মর্গে নেয়ার আগ পর্যন্ত যেসব মরদেহ অপেক্ষায় রাখার প্রয়োজন পড়বে, সেগুলো সেখানে (ওসেকে) রাখা যাবে। তাছাড়া বর্তমানে বিকেলের পর মর্গে লাশ ঢুকানোর সুযোগ থাকে না। বিকেলের পরও যেন মর্গে লাশ নেয়া যায় এবং রাখা যায়, সে ব্যবস্থা গ্রহণে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে আমরা অনুরোধ করেছি। চাইলে কিন্তু রাতেও মর্গে লাশ রাখা যায়। অন্য অনেক মেডিকেল কলেজের মর্গে সে সুযোগ আছে। যদিও ওনারা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) জনবল সংকটের কথা বলছেন। জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার।
প্রসঙ্গত, হাসপাতালের লাশঘরে পাহারাদারের কাজে নিয়োজিত মো. সেলিম (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে গত সোমবার দুপুরে হাসপাতাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গত বছরের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে হাসপাতালের লাশ ঘরে আনা এক কিশোরী ও অপর এক নারী মরদেহের সাথে বিকৃত যৌনাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম তার অপরাধ স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা (নং-১৯) দায়ের করা হয়েছে বলে জানান সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশেই পুলিশ ফাঁড়ি। আর পুলিশ ফাঁড়ির সাথে লাগোয়া হাসপাতালের লাশঘর। ‘পুলিশ কেইস’ বা অস্বাভাবিক ও অপমৃত্যুর ক্ষেত্রে হাসপাতালের পক্ষ থেকে লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়ে থাকে। পুলিশ এসে লাশ বুঝে নেয়। তবে পুলিশ বুঝে নেয়ার আগ পর্যন্ত (ক্ষেত্র বিশেষে বুঝে নেয়ার আগে-পরে) এ ধরনের মরদেহের ঠিকানা হয় হাসপাতালের লাশ ঘরে। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট মরদেহ পরবর্তীতে পোস্ট মর্টেমের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত অপমৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু জনিত মরদেহগুলো রাখার জন্যই হাসপাতালের লাশ ঘরটি ব্যবহার হয়ে আসছিল। গতকাল লাশঘরটি তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।