পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। এই সিরিজের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলের খারাপ সময়ে ব্যাট ও বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এই অলরাউন্ডার। এবার পাকিস্তান সফরে যাওয়ার আগে টেস্ট জেতার কোনো স্মৃতি ছিল না তাদের বিপক্ষে। এখন দ্বিতীয় দল হিসেবে পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। এমন সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন মিরাজ। তবে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চেই তিনি জানান, সিরিজ সেরা হয়ে পাওয়া অর্থ তিনি অনুদান হিসেবে দেবেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত হওয়া এক পরিবারকে। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন মিরাজ তা জানিয়েছেন পেছনের গল্পে। বিসিবির ভিডিওতে মিরাজ বলেন আমাদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ যখন চলছিল। আমার সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও চলে আসে। যেখানে দেখা যাচ্ছিল একটা ছেলে কান্না করছিল। আমার ছেলের মতোই বয়স। ছেলেটা কান্না করছিল আর বলছিল আমার বাবা মারা গিয়েছে। নামাজ পড়তে গিয়ে গুলি খেয়ে মারা গেছে। আমি রক্ত দেখেছি। আমার বাবা ফিরে আসেনি। ওই কথাগুলো এখনো আমার কানে বাজে। আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছিল। পুরো জিনিসটা আমি দেখেছিলাম। এই ঘটনাটা এতটাই হৃদয় বিদারক ছিল যে, আমার মন ব্যথিত হয়ে গিয়েছিল। তখনই নিয়ত করেছিলাম, ম্যান অব দ্য সিরিজ হবো কি না, তা তো জানি না। কিন্তু আমি দেশে এসে তাদের কিছুটা সাহায্য করব। ওই সময়ই নিয়ত হয়েছিল। আর সৃষ্টি কর্তা মিরাজের সে আশাই যেন পূরণ করে দিলেন।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মিরাজ নির্বাচিত হলেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। ট্রফির সাথে অর্থ পুরস্কার হিসেবে পেলেন পাকিস্তানী ৫ লাখ রুপি। পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চে মিরাজ বাংলায় বললেন আমাদের দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একজন রিকশা চালক নিহত হয়েছেন। আমি আমার এই পুরষ্কার সে রিকশা চালকের পরিবারকে দিতে চাই। যাতে তাদের কিছুটা হলেও উপকার হয়। মিরাজের এমন ঘোষণা প্রশংসিত হয়েছে সর্ব মহলে। অবশ্য এর আগে প্রথম টেস্টে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া মুশফিকুর রহিম তার অর্থ পুরস্কার বন্যার্তদের মাঝে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। লিটন দাশও বন্যার্থদের মাঝে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যে যার যার অবস্থান থেকে মানবিক কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করছেন। অবশ্য সেটি তারা সব সময় করে থাকেন। তবে মিরাজের কাজটা একটু বেশি স্পর্শ করেছে দেশের মানুষকে।