চিকনদন্ডী ইউনিয়নের যুগীরহাট শেখ মার্কেটের দ্বিতল ভবনের আর এন্ড জে কোচিং সেন্টারে এখন কেবলই চাপা শূন্যতা, চারপাশে খাঁ খাঁ নিস্তব্ধতা। কোচিং সেন্টারটির ভেতরে-বাইরে কোথাও নেই শিক্ষার্থীদের চিরাচরিত পদচারণা। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের ছয়দিনই মুখর থাকত কোচিং সেন্টারটি। কিন্তু গতকাল শনিবার কোচিং সেন্টারে গিয়ে দেখা গেল প্রথম তলার প্রধান ফটকে তালা। ছাত্র-শিক্ষকহীন সেই কোচিং সেন্টারের সামনে শুধু উৎসুক জনতার ভিড়ই লক্ষ্য করা গেছে। আগের দিন শুক্রবার এই কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের সঙ্গে আনন্দে ভ্রমণে গিয়েছিলেন মীরসরাই খৈয়াছড়া ঝর্ণায়। শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ এবারের এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় ভ্রমণ শেষে তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরতে চেয়েছিল। তারা ঘরে ফিরেছে বটে, তবে লাশ হয়ে। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি মীরসরাই রেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় মহানগর প্রভাতি ট্রেনের ধাক্কায় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। এসময় গাড়িতে থাকা ১৮ জনের ১১ ছাত্র-শিক্ষকই নিহত হন ঘটনাস্থলে।
আর অ্যান্ড জে প্রাইভেট কেয়ার নামে কোচিং সেন্টারটিতে পড়াতেন আব্দুল্লাহ আরিফ রিসাদ নামে একজন। তিনি জানান, গত মার্চ মাসে কোচিং সেন্টারটি চালু করা হয়েছিল। সজীব, জিসান, রিদুয়ান ও রাকিব মিলে কোচিং সেন্টারটি চালু করেছিলেন। তারা এবং রিসাদসহ ছয় জন কোচিং সেন্টারে পড়াতেন। তিনি বলেন, যে চার জন কোচিং সেন্টারটি চালু করেছিলেন, তারা চার জনই মারা গেছেন। অথচ একদিন আগেও কত কথা হচ্ছিল! একসাথে ছিলাম। আমারও যাওয়ার কথা ছিল। রাতে সিদ্ধান্ত ছিল, যাবো। কিন্তু সকালে কী মনে করে যেন মত পরিবর্তন করি। তাই বেঁচে গেছি। আজীবন এই করুণ স্মৃতি আমায় ভোগাবে। এটা বোধহয় পিকনিকে না যাওয়ার শাস্তি আমার!