সুস্থ মন- সুস্থ দেহ গড়ে তুলে সুন্দর জীবন

জোনাকী দত্ত | মঙ্গলবার , ২১ মে, ২০২৪ at ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ

এই পৃথিবীতে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন স্বভাবের ও মতের। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ তার ইগোর কারণে অন্যের মতো খারাপ আচরণ করে নিজের অজান্তেই। যেমন – ‘ও তো আমার বাসায় আসে না, কথা বলে না, ফোন করে না, রাস্তায় দেখা হলে আমি কেন আগে কথা বলব, ও আমার সাথে কথা বললে আমিও বলব।’ এভাবে কেউ কেউ ভাবে না যে, ওর মতো এই আচরণ আমি কেন করব? আমি একজন আলাদা মানুষ। আমি নিজের ইগো ত্যাগ করে বিবেক দিয়ে বিবেচনা করে আমার মতো কাজ করে যাব। কিন্তু অনেক সময় সেটা বুঝতে পেরেও না বোঝার ভান করে শুধু আত্ম অহংকারের জন্য। তাকে ছোট বা বড় যে কেউ যুক্তি দিয়ে বললেও সে নিজের জায়গায় অটল থাকে। মাঝে মাঝে ছোটরা যেটা বুঝতে পারে বড়রা তা পারে না। ছোটদের থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে।

কেমন আছেন?’ বেশিরভাগ মানুষের উত্তর হয় ভালো আছি। আসলে কি তাই? হয়তো স্বল্প সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে এটি সঠিক হতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় মানুষ মানুষকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্যেই এই উত্তর দেয়। কারণ আজকাল কারো সমস্যা বা কষ্টের কথা শোনার মতো সময় মানুষের নেই। কিংবা কেউ তার সমস্যার কথা কারো সাথে শেয়ার করতে ইতস্তত বোধ করে। হয়তো সে পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা ভেবেই ভালো আছি বলে এড়িয়ে যায়। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা তাদের মনের কথা কারো সাথে শেয়ার করতে চায় না। একজন আরেকজনকে যখন ভুল বুঝে অবজ্ঞা করে তখন তা কেউ মেনে নেয় আর কেউ নিতে পারে না। অন্যের কাছ থেকে পাওয়া আঘাত নিজের অন্তরে চাপা পড়ে যায়। কেউ কোনদিন তা জানতেও পারে না।

আমাদের যান্ত্রিক জীবনে মানুষ এখন শুধু যন্ত্রের মতো চলতে বাধ্য হচ্ছে। কারো হাতে যেন সময় নেই। একটু মনের কথা বলা, সাথে সময় কাটানো, কিংবা বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনের বাসায় গিয়ে আড্ডা দেওয়া সেই সোনালী দিন গুলো এখন হারিয়ে গেছে। এখন ভাতের টেবিলেও পরিবারের সবাইকে একসাথে পাওয়া যায় না। যে যার যার মতো যেখানে খুশি খাবার খেতে খেতে টিভি সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজ বা সিনেমা দেখে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আগে কেউ বাসায় বেড়াতে আসলে ঘরের ছোট বড় সব সদস্যরা কুশল বিনিময় করত। কিন্তু বর্তমানে এমনি তো মানুষ খুব কমই মানুষের বাসায় যায়। তারপর বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ঘরে বসে মোবাইল, ল্যাপটপে মগ্ন থাকে। বাসায় কে এলো গেলো ঐদিকে ওদের কোন মাথাব্যথা নেই। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো কোনো পরিবারে এখনো আন্তরিকতা, সম্প্রীতি বজায় আছে। মানব জীবন ক্ষণিকের। আমরা সামাজিক জীব হিসেবে একা বাস করতে পারি না। তবে সমাজের সকলের সাথে ভালো সম্পর্ক করতে হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বার্থ, ইগো ত্যাগ করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচোখ নিয়ে যতো কথা
পরবর্তী নিবন্ধসমঝোতা করে চলতে না পারলে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা দায়