সুন্দর দাঁত আর মধুর হাসি কে না চায়

বিশ্ব অর্থোডন্টিক্স স্বাস্থ্য দিবস আজ

ডা. মো. কামরুল হাসান | বুধবার , ১৫ মে, ২০২৪ at ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ

আজ ১৫ মে, বিশ্ব অর্থোডন্টিক্স স্বাস্থ্য দিবস।

অর্থোডন্টিক্স হলো দন্তচিকিৎসার একটি বিশেষায়িত বিভাগ যা দাঁত ও চোয়ালের ত্রুটিযুক্ত রোগ নির্ণয়, প্রতিরোধ এবং সংশোধন করে। এটি মুখের বৃদ্ধি সংশোধন করার দিকেও মনোনিবেশ করে, যা ডেন্টোফেসিয়াল অর্থোপেডিক্স নামে পরিচিত।

দাঁতের অর্থোডন্টিক চিকিৎসা কি সেটি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন বিভিন্ন সময়। দাঁতের অর্থোডন্টিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে মূলত আঁকাবাঁকা দাঁত, ফাঁক হয়ে যাওয়া দাঁত, উঁচুনীচু দাঁতকে রিমুভেবল প্লেট বা ফিক্সড ব্রেস পরিয়ে আস্তে আস্তে সহনীয় মাত্রায় চাপ প্রয়োগ করে দাঁতগুলোকে একত্রিত করা হয় যাতে আপনার সেরা সুন্দর হাসিটি সবাইকে উপহার দিতে পারেন। আঁকাবাঁকা বা এলোমেলো দাঁতের চিকিৎসায় অর্থোডন্টিক চিকিৎসা এখন জনপ্রিয় ও নিরাপদ।

দাঁত আঁকাবাঁকা হওয়ার প্রথম কারণ বংশগত। দ্বিতীয়ত, বাচ্চাদের মুখে সাধারণত জন্মের ৬ মাস পর হতে ২ বছর পর্যন্ত ২০টি দুধের দাঁত আসে। এই দুধদাঁতগুলো পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁতগুলো মুখের ভেতর আসে। কোনো কারণে যদি এই দুধের দাঁত সময় মতো না পড়ে বা আগেই পড়ে যায় তাহলে নিচে যে দাঁতটা থাকে সে শেকড় হারিয়ে ফেলে। আর ঠিকমতো উঠতে পারে না। মাঝামাঝি উঠে, কখন বাইরে চলে যাচ্ছে, কখনো ভেতরে চলে যায়, যেখানে জায়গা পায় সেখানে চলে আসছে। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হচ্ছে।

দুধের দাঁত পড়ে গিয়ে যখনই স্থায়ী দাঁত উঠবে তখনই চিকিৎসা শুরু করা উচিত, দেরি না করে। তাহলে দাঁত সুন্দরভাবে সাজানো যায়। এর মানে অবশ্যই ১১ থেকে ১৩ বছরের মধ্যেই আঁকাবাঁকা দাঁতের চিকিৎসা শুরু করতে হবে। অর্থডেনটিস্টের কাছে যেতে হবে। উনিই বলে দেবেন কখন চিকিৎসা শুরু করবে।

দাঁতকে সুন্দর রাখলে হাসতেও ভালো লাগবে, দেখতেও ভালো লাগবে।আর সৌন্দর্যের জন্য আপনি যতই সাজেন, যত কিছুই করেন হাসিটা তো একটা মাধ্যম সৌন্দর্য প্রকাশের। কারো সাথে যখন দেখা হয় প্রথমেই আমরা মিষ্টি করে হাসি। সুন্দর হাসির জন্য সুন্দর দাঁত অতি প্রয়োজনীয়।

আঁকাবাঁকা দাঁতের চিকিৎসা যদি করা না হয় তবেএর জটিলতাও অনেক। যখনই ক্যালকুলাস হয়ে, জিনজিভাইটিস বৃদ্ধি পায় তখনই দাঁত দ্রুত পড়ে যায়। তখন দেখা যায় দুই দাঁতের মাঝখানে ক্ষয় হয়ে যায়। দুই দাঁতের মাঝখানে যখন কালো কালো দাগ হয়ে যায় এটা ফিলিং করাও যায় না। একটু বয়স হয়ে গেলে দাঁত আকাঁবাঁকা থাকলে দাঁত বাঁধানোও যায় না। দাঁতের কারণে যদি না খেতে পারেন তাহলে শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে যাবেন।

বলা হয়, ‘স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল’। স্বাস্থ্যের সাথে খাবারের একটা সম্পর্ক আছে। আর খাবার চাবানোর সাথে দাঁতের একটা সম্পর্ক আছে। যদি সারাজীবনই আপনি দুধ খান, না চাবিয়ে খাবার খান তাহলে কী ভালো লাগবে? আর পৃথিবীতে যত মজার খাবার প্রতিটি জিনিসই আমরা চিবিয়ে খাই। তাই দাঁত ঠিক করা খুব প্রয়োজন।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীরা ভয় পান দাঁত ফেলা নিয়ে ও বিভিন্ন ব্রাসেস, ব্রেকেটএগুলো পড়ে থাকতে। এই বিষয়ে ঝামেলা মনে করে আর কতদিন ধরে পড়ে থাকতে হবে? যদি আপনার দাঁত পর্যাপ্ত ফাঁকা থাকে তাহলে দাঁত ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন নাই। এখন যদি বেশি আঁকাবাঁকা থাকে তাহলে সুন্দর করে সাজানোর জন্য প্রয়োজনীয় দাঁতটা ফেলে দেই। এই ফাঁকাটা বন্ধ হয়ে যায়। এটা একটা বড় ব্যাপার। আর দ্বিতীয় বিষয় হলো সময়। এই চিকিৎসার জন্য কম করে হলেও দেড় বছর সময় লাগে। এটা তাড়াহুড়া করে করার বিষয় না। তাই সময় দিতে হবে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেলা শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি
পরবর্তী নিবন্ধওয়াসা ও রিহ্যাবের মতবিনিময় সভা