সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় : কবি ও ঔপন্যাসিক.

| সোমবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (১৯৩৪২০১২)। বিশ শতকের শেষভাগে সক্রিয় একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দপরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তার কবিতার বহু পংক্তি সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘নীললোহিত’, ‘সনাতন পাঠক’, ‘নীল উপাধ্যায়’ ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার মাইজপাড়া গ্রামে। জন্ম বাংলাদেশে হলেও তিনি বড় হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পড়াশোনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। পড়াশুনা শেষ করে কিছুদিন তিনি অফিসে চাকুরি করেছেন। তারপর থেকে সাংবাদিকতায়। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান মি. পলেন কলকাতায় এলে সুনীলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয়। সেই সূত্রে মার্কিন মুলুকে গেলেন সুনীল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে। ডিগ্রি হয়ে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপগ্রন্থাগারিক হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন সুনীল। ১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’ এবং ১৯৬৬ সালে প্রথম উপন্যাস আত্মপ্রকাশ প্রকাশিত হয়।

তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হল ‘আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি’, যুগলবন্দী (শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে), ‘হঠাৎ নীরার জন্য’, ‘রাত্রির রঁদেভূ’, ‘শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা’, ‘অর্ধেক জীবন’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘অর্জুন’, ‘প্রথম আলো’, ‘সেই সময়’, ‘পূর্ব পশ্চিম’, ‘ভানু’ ও রাণু’, ‘মনের মানুষ’ ইত্যাদি। শিশুসাহিত্যে তিনি ‘কাকাবাবুসন্তু’ নামে এক জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজের রচয়িতা। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি ভারতের জাতীয় সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সাহিত্য আকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশ কিছু গল্পউপন্যাসের কাহিনি চলচ্চিত্রে রূপায়ণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ এবং ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ উল্লেখযোগ্য। ‘হঠাৎ নীরার জন্য’ তার চিত্রনাট্যে নির্মিত আরেকটি ছবি। ২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ ও ১৯৮৯ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।.

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধছোটদের বইমেলা উৎসবে এম.এ মালেকের বক্তব্য প্রসংগে