কক্সবাজার জেলার মাস্টারপ্ল্যান বা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পের মধ্যে সুনীল অর্থনীতিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সঠিক নীতি ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে এ খাতে বছরে অতিরিক্ত ৬ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখতে পারে। গতকাল শনিবার কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) উদ্যোগে আয়োজিত ব্লু–ইকোনমি বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন।
কউক চেয়ারম্যান কমডোর (অব.) মোহাম্মদ নূরুল আবছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার–৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। সেমিনারে সহ–আয়োজক ছিল জুনিয়র চেম্বার ইন্ট্যারন্যাশনাল, কক্সবাজার।
আনলকিং বাংলাদেশ পোটেনশিয়ালস অব ব্লু ইকোনমি– শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, আধুনিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পর্যটনের সমৃদ্ধি, বন্দর উন্নয়ন, পরিকল্পিত বিনিয়োগে ও সঠিক নীতি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে সুনীল অর্থনীতি ২০৩০ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বার্ষিক অতিরিক্ত ৬ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখতে পারে। তাই সমৃদ্ধ কক্সবাজার গঠন ও সুনীল অর্থনীতি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
কউক চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতিতে ব্লু–ইকোনমির অবদান প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার যা ২০৩০ সাল নাগাদ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ব্লু–ইকোনমি বিভিন্ন পলিসি তৈরি করা হলেও যথাযথ গুরুত্বের অভাবে সুনীল অর্থনীতি থেকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সম্ভাবনা অধরাই থেকে যাচ্ছে। তিনি এ বিষয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি পৃথক সংস্থা তৈরি ও ‘ওশান গভর্ন্যান্স ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরির প্রস্তাব রাখেন। কউক চেয়ারম্যান বলেন, সুনীল অর্থনীতির বিকাশে প্রয়োজনীয় পলিসিগত সহায়তা দিতে বদ্ধপরিকর কউক। তাই এ সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ প্রণয়নের জন্য বিষয়টিকে কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ণ প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আয়োজিত এই সেমিনার থেকে প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কক্সবাজারে সুনীল অর্থনীতির বিকাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সেমিনারে বিশেষজ্ঞ বক্তা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে এম আজম চৌধুরী, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। পরে উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ ও স্থানীয় উদ্যোক্তাগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।