সীমানা ছাড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা : বান কি মুন

| মঙ্গলবার , ১৬ মার্চ, ২০২১ at ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরাধিকার বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী মানুষের লড়াইয়ের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন। গতকাল সোমবার এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সূচনালগ্নে কূটনীতিক হিসাবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে একথা বলেন তিনি। বান কি মুন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রভাব ও উত্তরাধিকার বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে, উদ্বুদ্ধ করেছে বিশ্বব্যাপী অন্য উপনিবেশবাদবিরোধী ও স্বাধীনতা সংগ্রামকেও।
বঙ্গবন্ধুর সমন্বিত কূটনীতি স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশের শিল্পায়নসহ সার্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষকে অতি দারিদ্র্য থেকে তুলে এনেছে বলেও মন্তব্য করেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব। খবর বিডিনিউজের।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজের চতুর্থ পর্ব ‘বঙ্গবন্ধু : বাংলাদেশের চেতনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বান কি মুন। একাত্তরে বাংলাদেশ যখন মুক্তিযুদ্ধ করছে, তখন দিল্লিতে দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসে অধঃস্তন কূটনীতিক ছিলেন জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব বান কি মুন। ১৯৭৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চুক্তির প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন তিনি। বান কি মুনের কলম দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত ওই চুক্তিতে সই করেছিলেন জানিয়ে গতকাল সোমবার তিনি বলেন, এখনও সেই কলম আমি নিজস্ব স্যুভেনির হিসাবে সংরক্ষণ করেছি। এটা আমার ব্যক্তিগত স্মৃতি। সেই সফরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, ওই কর্মকর্তার নম্বর ফোন নম্বর চাইলে এক পাতা কাগজের কোণে নম্বরটি লিখে তা ছিঁড়ে তার হাতে দেন। ‘মিতব্যয়িতার’ ওই ঘটনা তাকে অভিভূত করে উল্লেখ করে মুন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা কীভাবে তাদের কাজ, জীবন ও সম্পদ রক্ষায় মিতব্যয়ী ছিলেন তা আজও সুস্পষ্ট মনে পড়ে। একখণ্ড কাগজও তারা বাঁচাতে চাইতেন। ‘সম্পদ বাঁচানোর’ এই মানসিকতাও যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে তিনি মনে করেন। বান কি মুন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শুধু যে বাংলাদেশের জনক হিসেবে নয়, বিশ্বনেতা হিসেবেও আজীবন স্মরণ করা হবে, অধঃস্তন একজন কূটনীতিক হিসেবে সেই সময়ে সেটা তার কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এমন একজন দূরদর্শী ব্যক্তি ও বিরল নেতা, সদ্য জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের উন্নতিই ছিল অভীষ্ট। মানবাধিকার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমতা এবং পরিবেশের ক্ষেত্রে তিনি সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ঢাকায় কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কেয়ান, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বক্তব্য দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিজল চেয়ারম্যানের মানবিক উদ্যোগ
পরবর্তী নিবন্ধআসছেন পাঁচ রাষ্ট্রনেতা হবে বেশ কিছু এমওইউ