সীতাকুণ্ডে আগুনে পুড়ল ১৭ দোকান ও গুদাম

এক শিক্ষকের জীবনের সঞ্চয় পুড়ে ছাই

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | সোমবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে ১১টি দোকান ও ৬টি গুদাম পুড়ে গেছে। গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার পৌর সদরের কলেজ রোডে এ ঘটনা ঘটে।

পৌর সদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম বাহার জানান, সকালে ব্যবসায়ী বিশ্বজিতের ফোমের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন বেলালের ফোমের দোকান, স্টার লাইব্রেরি, বাবুলের লেপ তোষকের দোকানসহ আশপাশের ১১টি দোকান ও ৬টি গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এলেও কলেজ রোডের প্রবেশ মুখে থাকা মেলার গেটের কারণে ভেতরে ঢুকতে পারেনি। পরে গেট সরিয়ে তারা ঘটনাস্থলে যায় এবং আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। এতে আশপাশের অনেক দোকানপাট রক্ষা পেলেও দুই ঘণ্টা স্থায়ী আগুনে পুড়ে যায় ১৭টি দোকান ও গুদামে থাকা সমস্ত মালামাল।

রেজাউল করিম বাহার দাবি করেন, অগ্নিকাণ্ডে দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে নিঃস্ব হয়েছেন দশজন ব্যবসায়ী। সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম দুলাল বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। কিন্তু কলেজ রোডের প্রবেশ মুখে মেলা কমিটির গেটের কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। তারপরও সে বাধা পেরিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেড় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ফোমের গোডাউনে থাকা মশার কয়েল অথবা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া, পৌর মেয়র বদিউল আলম প্রমুখ। তারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

জীবনের সঞ্চয় পুড়ে ছাই : অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন সুভাষ চন্দ্র নাথ। তিনি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে অবসর নেন তিনি। দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লাইব্রেরির সামনে পুড়ে যাওয়া বইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি কাঁদছেন। এ সময় তিনি বলেন, শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়ার পর ইচ্ছা ছিল মনোযোগ দিয়ে লাইব্রেরির ব্যবসা করব। এজন্য সারা জীবনের জমানো টাকা এবং এক আত্মীয়ের কাছ থেকে আরও ৭ লাখ টাকা ধার করে ২০ লাখ টাকার শিক্ষাসামগ্রী উঠিয়েছিলাম জানুয়ারির ১ তারিখ। মেলার কারণে শিক্ষাসামগ্রী খুব একটা বিক্রি হয়নি। তাই দোকানে ওঠানো মালামালের বেশিরভাগই রয়ে গিয়েছিল। আগুনে আমার সারা জীবনের সঞ্চয় পুড়ে শেষ হয়ে গেল। আমার ছেলের লেখাপড়ার খরচ, সংসার খরচ কীভাবে চালাব?

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৯ পরিবার নিঃস্ব নগদ বিশ লক্ষ টাকা পুড়ে ছাই
পরবর্তী নিবন্ধবিজয়-৭১ এর অনুষ্ঠানে অনুপম সেন