সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে জনমত গড়ার চেষ্টা চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের

বাফুফেকে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বরাদ্দ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৯:০২ পূর্বাহ্ণ

১২ শর্তে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ২৫ বছরের জণ্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে এই স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার আর কোন অধিকার থাকলনা। কারন ফিফার সাথে চুক্তিতে এই স্টেডিয়ামের সংষ্কার কাজ করবে বাফুফে। সারা বছরই বাফুফের কর্মসুচি থাকবে এই স্টেডিয়ামে। ফলে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার খেলাধুলা চালানোর পথ হয়ে যাবে বন্ধ। কারন দেশের সবচাইতে সচল জেলা ক্রীড়া সংস্থা হচ্ছে চট্টগ্রাম। যেখানে প্রতি বছর অন্তত ৩০টি ইভেন্ট আয়োজন করা হয়। যার বেশিরভাগ খেলাধুলাই আয়োজন হয়ে থাকে এই এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ হঠাৎ করেই কারো সাথে কোন রকমের আলোচনা ছাড়াই এই স্টেডিয়ামটি বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে বাফুফেকে। তাও ২৫ বছরের জন্য। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এমন ঘোষনা মানতে পারছেননা চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা।

৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি। আর তখন থেকে বলতে গেলে সবগুলো সংস্থা কমিটিবিহীন। ফলে এনএসসির এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এগিয়ে আসছে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা।

ঢাকার পর দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর চট্টগ্রাম। আর ঢাকার পর সবচাইতে বেশি খেলাধুলার আয়োজন করা হয় এই চট্টগ্রামে। যদিও ঢাকার সমস্ত খেলাধুলা আয়োজন করে থাকে বিভিন্ন ফেডারেশন। সেদিক থেকে হিসেব করলে দেশে সবচাইতে এগিয়ে থাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নাম চট্টগ্রাম। হিসেব করলে দেখা যাবে দেশের অন্তত ৫০ টির বেশি জেলা ক্রীড়া সংস্থায় কোন খেলাধুলা হয়না। এমনকি সে সব জেলা স্টেডিয়াম গুলো পড়ে আছে অনাদর আর অবহেলায়। অথচ সে সব স্টেডিয়াম গুলো সংস্কার না করে চট্টগ্রামের মত জেলার স্টেডিয়াম ফেডারেশনকে দিয়ে চট্টগ্রামের খেলাধুলার পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা। যা মোটেও কাম্য হতে পারেনা। বাংলাদেশের খেলাধুলায় সবচাইতে এগিয়ে থাকা জেলাটির নাম চট্টগ্রাম। প্রায় ৩০ টি ইভেন্ট আয়োজন করা চট্টগ্রামের এই বিশাল কর্মযজ্ঞের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত অন্তত ৭০০০ মানুষ। কেউ খেলোয়াড়, কেউ কোচ, কেউ ট্রেইনার, কেই কর্মচারী। কাজেই ক্রীড়া পরিষদের এমন সিদ্ধান্তে এই সব মানুষের রুটিরুজির পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংগঠকরা।

এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা ক্রীড়া উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপ প্রেরন করেছে যাতে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। একই সাথে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা জনমত তৈরির চেষ্টাও করছে। এরই মধ্যে ক্রীড়া সংগঠকরা চট্টগ্রামের সবগুলো রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেছেন। যাতে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি জনমত গঠন করা যায়। প্রয়োজনে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বর্গ, সুশীল সমাজ সবাই মিলে আন্দোলনে নামার কথাও ভাবছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ।

তাদের দাবি যেন এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। তাদের অবিযোগ চট্টগ্রামে যে পরিমান খেলাধুলা হয় সে পরিমান মাঠ নেই। তাই নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও খেলাধুলা গুলো পরিচালিত হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই এই সিদ্ধান্তে যেন সবকিছু এলোমেলা হয়ে গেল। চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জণ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষনা দিয়েছেন। পাশাপাশি দেশের প্রধান উপদেষ্টা যিনিও একজন চট্টগ্রামের মানুষ তার কাছে এই দাবি পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বলা যায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এমন সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে উঠেছে নিন্দার ঝড়।

তাদের দাবি যদি বাফুফে ফিফার অনুদান নিয়ে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে নতুন করে গড়ে তুলতে চায় তাহলে সেটা হবে ভুল। করতেই যদি হয় তাহলে নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করে সেটা ব্যবহার করতে পারে বাফুফে। চট্টগ্রামে নতুন স্টেডিয়াম করার পর্যপ্ত জায়গাও রয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী জেলা কঙবাজারেও গড়া যেতে পারে নতুন আরেকটি স্টেডিয়াম। কিন্তু এম এ আজিজ স্টেডিয়াম কেন ?

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার দিনে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি লিটনের
পরবর্তী নিবন্ধলিটন-সাকিবকে ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ