কোর্ট হিলের ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি খাস জমিতে আইনজীবীদের ৫টি বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমোদন প্রদানের অভিযোগ তদন্তে মাঠে নেমেছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। টিমের সদস্যরা সরেজমিনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন এবং সচিবের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। এছাড়া অভিযোগ–সংশ্লিষ্ট কিছু নথিপত্রও সংগ্রহ করেছে দুদক টিম।
দুদক চট্টগ্রাম–১ এর উপপরিচালক নাজমু সাদাত আজাদীকে বলেন, সংশ্লিষ্টদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের সহকারী পরিচালক ফজলুল বারী ও এনামুল হকের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার অভিযানটি পরিচালিত হয়। প্রাথমিকভাবে তারা কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। ঈদের ছুটির পর পূর্ণাঙ্গ রেকর্ডপত্র সংগ্রহপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কোর্ট হিলে নতুন করে দুটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। বিষয়টি নজরে পড়লে প্রতিবাদ জানায় জেলা প্রশাসন। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসন গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর কোর্ট হিলে থাকা তিনশর উপর অবৈধ স্থাপনাকে ঘিরে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর আগে ২৯ আগস্ট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ওয়াসাকে পৃথক চিঠি দেয়া হয়। এরও আগে ৮ আগস্ট কোর্ট হিলের অনুমোদনবিহীন স্থাপনার তালিকা চেয়ে সিডিএকে চিঠি দেয় জেলা প্রশাসন। সিডিএ সেই চিঠির জবাব দেয় ১৭ আগস্ট। যেখানে উল্লেখ করা হয়, কোর্ট হিলে থাকা আইনজীবীদের ভবন বা স্থাপনাগুলো অনুমোদিত। তবে কোর্ট হিলের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের চতুর্দিকে এবং জহুর হকার মার্কেটের দক্ষিণাংশে সেমিপাকা যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলোর অনুমোদন নেই।
এদিকে কোর্ট হিলের ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি খাস জমিতে আইনজীবীদের ৫টি বহুতল ভবন অনুমোদন কার্যক্রমের সাথে জড়িত সিডিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীর নাম, পদবী, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (স্থায়ী/বর্তমান ঠিকানা), মোবাইল নম্বর ইত্যাদি উল্লেখ করে তথ্য প্রদান করতে সিডিএ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন অধিশাখা হতে ৭ এপ্রিল ইস্যুকৃত এ পত্রে সিডিএ চেয়ারম্যানকে নকশা অনুমোদনের সাথে সংশ্লিষ্ট নথিসমূহের নোটশিটের ফটোকপি, সভার কার্যবিবরণী, অনুমোদিত নকশার কপি, অনুমোদনের বিবরণী শিট তিন কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয় বরাবর প্রেরণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২০০৩–২০০৪, ২০০৪–২০০৫, ২০০৮–২০০৯ এবং ২০১৪–২০১৫ সালে বিধিবহির্ভূতভাবে আইনজীবীদের ৫টি ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন করেছেন সিডিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।